বরিশাল বাণীঃ
বরিশালের বাকেরগঞ্জে সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকিদাতার বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো জীবনাশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার।
অপরদিকে ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকিদাতারা হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি, ঘর পোড়ানো এবং মারধরের বিশটি মামলার এজহারভুক্ত আসামী হয়েও পুলিশের নাকেরডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে- থানা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে আসামীরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশেষ করে মামলার প্রধান আসামীর নানা বাড়ী ওসির নিজ এলাকায় হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছেনা।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, আসামী গ্রেপ্তারে আমাদের কোনো গাফলতি নেই। অভিযান অব্যহত রয়েছে। মামলার বাদী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে।
মামলার এজহারভুক্ত কোনো আসামীর নানা বাড়ী আমার নিজ এলাকায় কিনা তা আমার জানা নেই বলে জানান ওসি।
থানা ও বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৬নং ফরিদপুর ইউনিয়নের পূর্ব ভাতশালা গ্রামের নিজাম হোসেন খানের মেয়ে সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ মোসা: নাজনীন আক্তারকে (১৫) স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই কু-প্রস্তাব সহ উক্ত্যক্ত করতো পাশ্ববর্তী ইছাপুরা গ্রামের বাবুল হাওলাদারের ছেলে মো. বায়েজিদ। তার উক্ত্যক্তের কারণে নাজনীনের পড়াশুনাও বন্ধ ছিলো দীর্ঘদিন।
ঘটনার দিন গত গত ২৯ মার্চ উক্ত্যক্তকারী বায়েজিদ এলাকার চিহিৃত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী জহিরুল ইসলাম মামুন ওরফে হাতকাটা মামুনকে ভাড়া করে নাজনীন আক্তারকে আপহরনের জন্য। আ.লীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামী হাতকাটা মামুন তার বাহিনীর সদস্য একই এলাকার আব্দুল মালেক হাওলাদারের ছেলে সুমন, মৃত আলম মোল্লার ছেলে খাটো মামুন, মৃত ইসমাইল মৃধার ছেলে মো. কাওছার এবং উক্ত্যক্তকারী বায়েজিদ বিকাল সাড়ে ৫টায় হানা দেয় ছাত্রীর বাড়ীতে। পিতা-মাতার সামনে থেকে তুলে আনার চেষ্টা চালায় হাতকাটা মামুন। এসময় ডাকচিৎকার দিলে তাদের বেদম মারধর করা হয়। আশপাশের লোকজন চলে আসায় অপহরনে ব্যর্থ হাতকাটা মামুন এবং উক্ত্যক্তকারী বায়েজিদ হুমকি দিয়ে আসে নাজনীনকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করা হবে বলে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা শাহানাজ পারভীন বাদী হয়ে উল্লেখিত ৫ জনকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বাকেরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং-১১, তারিখ: ১১-০৪-২০ইং
এদিকে মামলা দায়েরের তিনমাস পার হলেও আজ পর্যন্ত এজাহার নামীয় একজন আসামীও গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা পুলিশ।
উল্টো আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘরে বেড়াচ্ছে আর বাদী ও তার মেয়েকে জীবনাশের হুমকি দিচ্ছে।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ত্রাসখ্যাত জহিরুল ইসলাম মামুন ওরফে হাতকাটা মামুন। তার বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানা এবং বরিশাল আদালতে ২০টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে আ.লীগ নেতা মহিউদ্দিন হত্যা সহ চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টা, ঘর পোড়ানো এবং মারধরের মামলা উল্লেখযোগ্য।
বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, গণধর্ষণের হুমকিদাতা আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো গাফলতি নেই। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত আছে বলে জানান জেলা পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা।