বরিশাল বাণী: বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শনিবার (৫ নভেম্বর)। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে উদ্যান। শুক্রবার রাত থেকেই মিছিলে-স্লোগানে নেতাকর্মীরা মাতিয়ে রাখেন সভাস্থলের চারপাশ।শনিবার সকাল ১১টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশস্থলসহ আশপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন। ভোর থেকেই হিজলা, মুলাদী, মেহেন্দীগঞ্জর শত শত নেতাকর্মী ট্রলারে করে সমাবেশস্থলে আসছেন।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ উপলক্ষে গতকালই বরিশালে পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ছাড়া, বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে গত তিন দিন ধরেই এসেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর আগে থেকেই স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছেন।
মঞ্চে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত চেয়ার ফাঁকা রেখে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিভাগীয় সমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে এই সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দোয়া করা হয়।
সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলসহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুরুর জন্য অপেক্ষা করছেন। মিছিল করতে করতে অনেকেই শহরের বিভিন্ন প্রাঙ্গণ থেকে উদ্যানের দিকে আসছেন।
ইতিমধ্যে বান্দ রোড, জেলা স্কুলের মোড়, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তারা বান্দ রোড, জেলা স্কুলের মোড়, নগরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান করছেন।
পরিবহন বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে ভেঙে তারা সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন। বরিশালের হিজলা, মুলাদি ও মেহেন্দীগঞ্জের নেতাকর্মীরা ভাড়া করা ট্রলার-লঞ্চে করেও বরিশাল এসেছেন। পথে বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাধা দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করেই তারা পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। শতাধিক ট্রলার নদীতে ভাসতে দেখা যায়। আজও ট্রলারে করে আসা অব্যাহত রয়েছে। হয়রানি ও বাধার আশঙ্কায় সড়কপথে নেতাকর্মী কম আসছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ভয়-ভীতি ও বাধা উপেক্ষা করেই দলীয় নেতাকর্মীরা সভাস্থলে পৌঁছেছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সভাস্থলে উৎসবমুখর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সমাবেশস্থলসহ এর আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ মোতায়েনের অনুরোধ করা হয়েছিল। যদি তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করে, তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। সব মিলিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ বরিশাল শহরে মোতায়েন করা হয়েছে।