শেবামেক’র বিশেষজ্ঞরা বললেন, এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারে আগামী প্রজন্ম স্বাস্থ্যহীনতার ঝুঁকিতে

প্রকাশের তারিখ: নভেম্বর ২৩, ২০২২ | ১১:২৯ অপরাহ্ণ

বরিশাল বাণী: এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারে আগামী প্রজন্ম স্বাস্থ্যহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে এন্টিবায়োটিক ডোজে যদি সবাই সচেতন না হওয়া যায় তাহলে আগামী প্রজন্ম স্বাস্থ্যহীনতার ঝুঁকিকে পড়তে হবে। তাই এ ব্যপারে সর্বস্থরের জনগনকে সচেতন হওয়া অতীব। গতকাল বুধবার বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ মন্তব্য করেন। সভায় বক্তারা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর। অ্যান্টিবায়োটিক ঠা-া বা ভাইরাসজনিত রোগে কোনো কাজ করে না। যদি ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়, তবে বিপজ্জনক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসা চলতে থাকলে একটা সময় আসবে যখন ব্যাকটেরিয়াকে মারা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দিনভর র‌্যালী, আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পালিত হলো বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ২য় তলার ৩ নং লেকচার গ্যালারীতে মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম আকবার কবির’র সভাপতিত্বে সভায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রধান অতিথি ছিলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জামাল সালেহ্ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম। সভায় বিশেসজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম ও ডাঃ এমটি জাহাঙ্গির হুসাইন। এছাড়া অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যপক ডাঃ মোঃ নাজিমুল হক, অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মনিরুজ্জামান শাহিন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ এসএম মনিরুজ্জামান শাহিন প্রমুখ। মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, আমাদের দেশে রোগীরা ওষুধের দোকান (ফার্মেসি) থেকে মুখস্থ অ্যান্টিবায়োটিক কিনে নিয়মবহির্ভূতভাবে সেবন করে থাকেন। ফলে ওষুধটির যথার্থ প্রয়োগ না হওয়ায় জীবাণুগুলো ধীরে ধীরে রেজিসট্যান্স হয়ে পড়ছে। কারন অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অন্য ওষুধের সঙ্গে এর কোনো ইন্টারঅ্যাকশন আছে কি না তা সাধারণ মানুষ জানেন না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে গিয়ে অনেকে অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বজুড়ে এটি একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই এখন থেকেই এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। তাই এ সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরির জন্য এই এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ পালন করা হয়। সভা শেষে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগীতার অংশ গ্রহনকারী ও বিজয়ীদের মাঝে সনদ এবং ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। এর আগে সকাল ৯টায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জামাল সালেহ্ উদ্দিন’র নেতৃত্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে সচেতনতা মূলক র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম’র নেতৃত্বে এ উপলক্ষ্যে অপর একটি র‌্যালী বের করা হয়। উল্লেখ্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সচেতন হই, সকলে মিলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর সপ্তাহব্যাপী বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ পালনের সহযোগীতা করে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আইডিসিআর, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সার্ভিলেন্স ইন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host