যাত্রী সংকটে ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

প্রকাশের তারিখ: এপ্রিল ৪, ২০২৩ | ৮:২০ অপরাহ্ণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি ::: যাত্রী সংকটে ঝালকাঠি-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিকরা। এতে বিপাকে পড়েছেন লঞ্চ টার্মিনাল এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ঘাটে কাজ করা শ্রমিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ বিকেলে রাজধানীর উদ্দেশ্যে ঝালকাঠি ঘাট ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল এমভি সুন্দরবন-১২ নামে যাত্রীবাহী লঞ্চটির। তবে যাত্রী সংকটে তা সেদিন ছাড়েনি। ওইদিনের পর থেকে ফারহান-৭ নামে আরেকটি লঞ্চ এ রুটে চলাচল করলেও একই সমস্যার কারণে সেটিও বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ।

এদিকে, ঝালকাঠি ঘাটে ছয়দিন বেঁধে রাখার পর রোববার (২ এপ্রিল) সুন্দরবন-১২ লঞ্চটি ৪৫ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যায়। এরপর ঢাকা থেকে আর ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসেনি সেটি।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, একসময় যাত্রীদের ভিড়ে মুখরিত ঘাট এলাকায় সুনসান নীরবতা। জনমানব শূন্য বিশালাকৃতির দুটি টার্মিনাল।

ঘাট এলাকার চা দোকানি আবু হোসেন, রফিকুল ইসলাম, সুলতান হাওলাদার জানালেন, লঞ্চ বন্ধ হওয়ার পর তাদের দোকানে মালামাল বিক্রি হয় না। সারাদিনে যে কয় টাকা বিক্রি হয় তা দিয়ে ঋণের কিস্তির টাকা ওঠে না।

ঘাটের শ্রমিকদেরও একই আকুতি। তারা বলছেন, লঞ্চ বন্ধ থাকলে তাদের পণ্য পরিবহনের কাজও বন্ধ থাকে। শ্রমিকরা পরিবারের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগাতে পারছেন না।

এমভি সুন্দরবন-১২ লঞ্চের ঝালকাঠি ঘাট ম্যানেজার মো. হানিফ হোসেন বলেন, ঝালকাঠি থেকে ঢাকা যেতে আমাদের লাস্ট ট্রিপে ৬০ জন ডেক যাত্রী হয়েছে। আর কেবিন ভাড়া হয়েছে দুই-তিনটি। এতে বর্তমানে প্রতিবার ঢাকা আসা-যাওয়ায় লঞ্চ মালিকের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়। তাই এ রুটে লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে।

কবে নাগাদ লঞ্চ চালু হতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঈদের আগে যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চ চলবে। তবে ঈদের পর আবারও রুটটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে যাত্রী হ্রাস পাওয়ায় লঞ্চের ব্যবসায় কিছুটা মন্দা যাচ্ছিল। তবে তাতে লোকসানে পড়তে হয়নি। কিন্তু দুই দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পুরো ব্যবসা ঝুঁকিতে পড়ে। ঝালকাঠি-ঢাকা রুটে গেলো সপ্তাহে পৌনে দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে লঞ্চ বন্ধ রেখেছি।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবি তুলেছে। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। শেষ পর্যন্ত লঞ্চ ব্যবসা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host