আমতলীতে হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ রেখে স্বামী উধাও

প্রকাশের তারিখ: এপ্রিল ৪, ২০২৩ | ৮:৩৭ অপরাহ্ণ

বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শাহিদা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়েছেন স্বামী। শাহিদার বাবার অভিযোগ, মেয়েকে হত্যা করে গলায় ফাঁস দেওয়ার নাটক সাজানো হয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে বাবা আব্দুল কাদেরের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৫ বছর আগে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে হারুন অর রশিদ চৌকিদারের সঙ্গে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাটিয়াভিটা গ্রামের আব্দুল কাদের চৌকিদারের মেয়ে শাহিদার বিয়ে হয়। ওই দম্পতির দুটি কন্যা সন্তান আছে।

জানুয়ারি মাসে স্বামী হারুন শাহিদাকে না জানিয়ে আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের শানু মিয়ার কন্যা নার্গিসকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী শাহিদার সঙ্গে বেশ বিরোধ চলে আসছিল। হারুন শাহিদাকে দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিসকে মেনে নিতে চাপ দেন। কিন্তু শাহিদা রাজি না হওয়ায় তাকে বেশ কয়েকবার মারধর করেছেন হারুন।

২০ মার্চ হারুন দ্বিতীয় স্ত্রীকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে শাহিদার সঙ্গে বিরোধ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। সোমবার রাতে ঘরের আড়ার সঙ্গে শাহিদাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান হারুন। তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান হারুন। ওইখানে প্রথম স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালিয়ে যান তিনি।

স্বজন ছাড়া মরদেহ হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে থাকে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে মরদেহ বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের কাছে হস্তান্তর করেছে।

শাহিদার বাবার অভিযোগ, জামাতা হারুন দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তোলার পর থেকে তার মেয়েকে বেশ কয়েক দফায় মারধর করেছেন। জামাতা ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে হত্যা করেছেন। হত্যা থেকে রক্ষা পেতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা বলে নাটক সাজান। ঘটনার পরপর হারুন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস পলাতক আছে।

এ বিষয়ে স্বামী হারুন অর রশিদের মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মেহেরিন আশ্রাফ বলেন, স্বজনরা শাহিদা নামের এক গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে। পুলিশে এলে মরদেহ তাদের হাতে হস্তান্তর করেছি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠাই। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host