বিএনপির নোটিসের জবাব দিলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী রুপন

প্রকাশের তারিখ: জুন ৩, ২০২৩ | ৭:১৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বিএনপির ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়া মো. কামরুল আহসান রুপন দলটির দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব দিয়েছেন।

শুক্রবার দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর এ লিখিত জবাব পাঠান তিনি।

জবাবে রুপন লিখেছেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২৫ মে। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। চিঠিতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের দোষারোপ করেছেন তিনি।

রুপন অভিযোগ করেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তফসিল ঘোসণার পর আমার নাম মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর তা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর বরিশাল মহনগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয় যে আমি বিএনপির কেউ নই। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।”

এরপরেও গণমাধ্যমে তিনি সবসময়ই বলে এসেছেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার আগে বিএনপির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা এলে সরে দাঁড়াবেন, যোগ করেন রুপম।

বর্তমানে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে রুপম বলেন, “যদিও বর্তমানে দলে আমার কোনো পদ-পদবী নেই। তবে দল শেষ পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই মেনে নেব।”

চিঠিতেও এ কথাই লিখেছেন তিনি। সেখানে বলেছেন, “এ মুহূর্তে দল আমাকে যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা মেনে নেব। দলের প্রতি ভালোবাসা, আস্থা অতীতে যেমন ছিল ভবিষ্যতেও সেরকম থাকবে।”

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় রুপনসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের ১৯ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশের জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে বলা হয়েছিল।

রুপনের বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, সে বিএনপি পরিবারের সন্তান। সারা দেশের মানুষ জানে এ সরকার আয়োজিত নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নেবে না। সে যদি বিএনপিকে ভালবাসত, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিত না।”

আগামী ১২ জুন ভোট হতে যাওয়া বরিশাল সিটি ভোটে মেয়র পদে স্বতন্ত্র পার্থী হয়েছেন রুপন।

বর্তমানে কোনো পদ না থাকলেও তিনি এক সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ছিলেন। তার বাবা আহসান হাবীব কামাল ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের মেয়র শওকত হোসেন হীরনকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন।

সে হিসেবে তিনি বিএনপি পরিবারের সদস্য হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি স্থানীয় নির্বাচনও বর্জনের ডাক দিয়েছে। বিএনপির এই অবস্থানের মধ্যেও নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের দুই জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে লড়েন। কাউন্সিলর পদেও ভোট করেন আরও অনেকে।

তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের পাঁচ মহানগর ভোটে বিএনপির কোনো কেন্দ্রীয় বা আলোচিত নেতা অংশ নেননি। ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা সরকার শাহনুর ইসলাম রনি গত ২৫ মের ভোটে অংশ নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে। বিএনপিতে তার কোনো পদ নেই। এ কারণ দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে দল কোনো ব্যবস্থা না নিলেও রুপমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host