বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মারামারির মধ্যে নিহত, অপমৃত্যুর মামলা

প্রকাশের তারিখ: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ | ৬:৫৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় দুপক্ষের মারামারির মধ্যে একজন নিহতের ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক লীগের নিহত নেতা সিরাজ সিকদারের (৫৮) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে শনিবার দুপুরে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী।

তিনি জানান, এ ঘটনায় শনিবার কোতোয়ালি মডেল থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজ বরিশালের হিজলা উপজেলার উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কোব্বাত সিকদারের ছেলে। এ ছাড়া তিনি উপজেলা গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক লীগের সভাপতি ছিলেন।

শুক্রবার দুপুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার মাঠে দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে তিনি মারা যান।

এদিকে সিরাজ দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহম্মেদের অনুসারী বলে দাবি করেন, হিজলা উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ। তারা আগে থেকে জনসভাস্থলে ছিলেন। পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা সভাস্থলে প্রবেশ করে মারামারি শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। তখন মারামারির মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

ঘটনার সময় জনসভা মাঠে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, “ড. শাম্মী বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তখন শাম্মীর অনুসারীরা তার পক্ষে শ্লোগান শুরু করেন। ওই সময় বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা জনসভা মাঠে প্রবেশ করছিলেন।

তার দাবি, শাম্মীর অনুসারীদের শ্লোগান শুনে পঙ্কজ অনুসারীরা ভয় পেয়ে হুড়োহুড়ি শুরু করেন। তখন শাম্মী অনুসারীরা বোতল ছুড়ে মারে ও ধাওয়া দেয়। বোতলের আঘাতে পঙ্কজ অনুসারী কয়েকজন আহত হয়েছেন। হুড়োহুড়ির সময় পড়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা গেছে বলে শুনেছি।

এ বিষয়ে শাম্মী আহমেদ ঘটনার দিন বলেন, সিরাজ কৃষক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কোনো লোক তার (পঙ্কজ) সঙ্গে নেই। আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে সিরাজ মারা গেছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথ ঘটনার দিন বলেন, আমার লোকজন যখন জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন, তখন হামলা হয়। জনসভা মাঠে তারা লাঠি ও রড কোথায় পেল?

পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন পঙ্কজ নাথ।

মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মিরাজ মোল্লা বলেন, মৃতের শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে, জনসভায় পঙ্কজ নাথের কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে হিজলায় বিক্ষোভ হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে মিছিলটি হয়।

এনায়েত বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে এসে শেষ হয়েছে।

এতে উপজেলার সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী লিয়াকত, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুলাইমান ছিলেন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host