বীমা পেশার ভবিষ্যৎ কী ???

প্রকাশের তারিখ: জানুয়ারি ৬, ২০২৪ | ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

পেশাগত কারনে প্রায়ই সভা-সেমিনারে অংশ নিতে হয়। প্রায় প্রতি যায়গায় একটি কমন প্রশ্ন থাকে, বীমা পেশার ভবিষ্যৎ কি?
ক্ষুদ্র পরিসরে এর পক্ষে লেখার পূর্বে অাজ অামি অাপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, শিক্ষা জীবন শেষ করার সাথে সাথে কি অাপনার চাকুরীর নিশ্চয়তা অাছে?
কোনো প্রকার অর্থনৈতিক লেনদেন (ঘুষ) ছাড়া কি অাপনার চাকুরীর নিশ্চয়তা অাছে? অাপনি কি মামু-খালু এবং রাজনৈতিক রেফারেন্স ছাড়া অামাকে চাকুরীর নিশ্চয়তা দিতে পারবেন? যে কোনো বিষয়ে ডিগ্রিধারীকে তার পঠিতব্য বিষয়ের বিপরীতে চাকুরী দিতে পারবেন? উওর একটাই, না!
যদি না পারেন তবে আপনার উচিৎ হবে যে যেই পেশায়ই নিয়োজিত থাকুক না কেনো সেটা যদি সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার সাথে করা যায় তবে তাকে উৎসাহিত করা।
তবে এ সবগুলো প্রশ্ন এড়িয়ে শুধুমাত্র নিজের যোগ্যতায় অাপনি যে পেশাটি গ্রহন করতে পারেন, তার নাম “বীমা পেশা”।
বলাবাহুল্য এই যে, কোনো পেশারই ভবিষ্যৎ নেই যদি অাপনি সেটা পরিকল্পিত শ্রমের মাধ্যমে অর্জন না করেন।
বীমা পেশা হলো এমন একটি পেশা যেটা ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে এসএসসি বা সমমান পাশের একজন ছাত্রও নামমাত্র লাইসেন্স ফি (২৩০/-) জমা দিয়ে প্রাথমিকভাবে খন্ডকালীন কাজ শুরু করতে পারেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে নিয়মিত কাজটি চালিয়ে গেলে তিন মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে স্বাভাবিক সফলতা এবং ছাত্রজীবন শেষে পূর্ণ মর্যাদার চাকুরে হিসাবেও অাত্নপ্রকাশ করতে পারেন। তাছাড়া এ পেশায় রয়েছ নারী-পুরুষের সমহারে অংশগ্রহণের সুযোগ।
অামি মনেকরি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ঘর প্রতি একজনকে চাকুরীর যে পরিকল্পনা তার বাস্তবায়নে বীমা শিল্পই হয়ে উঠতে পারে অন্যতম মাধ্যম।
এছাড়া বীমা পেশায় রয়েছে অামৃত্যু কাজ করার সুযোগ এবং অতি অল্প সময়ে পরিকল্পিত শ্রমের মাধ্যমে নিজেকে সমাজে প্রতিস্ঠিত করা, গাড়ী বাড়ীর মালিক হওয়া, স্বাচ্ছন্দ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন-যাপন করার সুযোগ।
১৯৯৮ সাল থেকে অদ্যবধি বীমা পেশায় কাজ করার পাশাপাশি সমসাময়িক অন্য পেশার পরিচিতজনকে নিয়ে পর্যালোচনা করে এই সিদ্বান্তে উপনীত হয়েছি যে পরিকল্পিত শ্রম দিতে পারলে বীমা পেশাই উত্তম পেশা।
অামার চেনা জানা অনেককেই দেখেছি ১৫/১৬ বছর পূর্বে সামান্য বেতন/কমিশনে বীমা পেশা শুরু করলেও বর্তমানে উচ্চহারে বেতন, ব্যক্তিগত গাড়ী, নিজস্ব বাড়ী, সহায়-সম্পত্তি ইত্যাদি অনেক কিছুই অর্জন করেছেন সম্পূর্ণ নিজের পরিস্রম ও যোগ্যতাবলে। কিন্তু অন্য কোনো পেশায় মাত্র ১৫/১৬ বছরে সৎভাবে উপার্জন করে এতোকিছু কি অর্জন করা সম্ভব?
এর জবাব আপনাদের কাছে। ব্যক্তিগতভাবে অামি খুবই বিব্রত হই জেনে-না জেনে অনেকেই যখন প্রশ্ন করেন বীমা পেশার ভবিষ্যৎ কোথায়?
মনে মনে হাসি এজন্য যে, এখন থেকে ১৮ বছর পূর্বে যে প্রশ্নটি করতো বর্তমানে গ্লোবালাইজেশনের এ যুগেও প্রশ্নটি করছে।
পুলকিত হই বীমা শিল্প ও পেশা সম্পর্কে মানুষের অাগ্রহ দেখে।
অার চিন্তিত হই এই ভেবে যে, যেখানে অাজ সারাবিশ্ব বীমাশিল্পকে নির্ভর করে রাস্ট্রীয়ভাবে অর্থনৈতিক সফলতা অর্জন করছে, অামাদের দেশে অামরা তখন এই শিল্প ও এই পেশার যথাযথ মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ।
তবে আশাবাদী বর্তমান সরকারের বীমা শিল্পের উন্নয়নে নানা নীতিমালা ও পদক্ষেপ গ্রহনে।
যাইহোক সকল প্রশ্নের উর্ধে উঠে বীমাকর্মীদের ধৈর্য, সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা ও অান্তরিকতার সাথে কাজ করে যেতে হবে, প্রমাণ করতে হবে বীমা পেশাই শ্রেষ্ঠ পেশা।

লেখক: মোহাম্মদ এমরান
কলামিস্ট ও বীমা কর্মকর্তা, ০৬/০১/২০১৭ইং

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host