৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

আমতলীর সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।

বরগুনার আমতলীতে মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধে সরকার কর্তৃক লকডাউনেও মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। সড়ক, মহাসড়ক, হাট-বাজার, বিপণি বিতান, মাছ ও কাঁচাবাজার, হাসপাতাল সর্বত্রই উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। শতকরা ৯০% মানুষ মুখে মাস্ক পড়েন না।

আমতলী পৌরশহরসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার ও হাট- বাজার ঘুরে দেখাগেছে, সকাল ৭টার পর থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী -পুরুষ ও শিশুরা শহর ও গ্রাম- গঞ্জের হাট- বাজারের দোকান ও বিপনীবিতান গুলোতে কেনাকাটা করতে আসে। বেলা যত বাড়ে তত ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি দোকান ও বিপনীবিতান গুলোতে মানুষ শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে ঠাসাঠাসি করেই একসঙ্গে একাধিক ক্রেতা কেনাকাটা করছেন। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কোন দোকানে জীবাণুনাশক স্প্রে নেই। নেই হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা। ৩ থেকে ৪ জনের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকলেও শতকরা ৯০% ক্রেতা- বিক্রেতা মুখে মাস্ক ছাড়া বেচাকেনা করেছেন।

ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রা, ইজিবাইকসহ দূরপাল্লার সকল প্রকার যাত্রীবাহী যানবাহনে ইচ্ছামতো যাত্রী পরিবহন করছে। ভাড়া বেশী নিলেও কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই।

মাহেন্দ্রা ড্রাইভার কামাল বলেন, আমরা আগের মতই ১০ জন যাত্রী নিয়ে গাড়ী চালাই। তবে সকল যাত্রীকে মাস্ক পড়িয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে আসা যাওয়া করি।

ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারী ও বে-সরকারী দপ্তরে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’- এমন লেখাকে উপেক্ষা করেই আসছেন দপ্তরে থাকা কর্তাব্যক্তি, কর্মচারী ও সেবা গ্রহীতারা। কোথাও নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই। উপজেলার প্রতিটি মসজিদে শতকরা ৯৫% মুসল্লি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মুখে মাস্কবিহীন নামাজ আদায় করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, আমার অফিসের অনেকেই নিয়মিত মাস্ক পড়েন না। এ জন্য সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরাও মাস্ক পড়ে না আসলেও বাধ্যহয়ে তাদের সেবা দেই।

অপরদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা দিকে পৌর শহরের বাসষ্ট্যান্ড ও মাছ- তরকারী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অভ্যান্তরিণ ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী একাধিক পরিবহন বাসগুলো দাঁড়িয়ে আছে। চালক, হেলপার ও যাত্রী কারো মুখে নেই মাস্ক। একাধিক সিটে দু’জন করে যাত্রী বসে আছেন। মাছ ও তরকারী বাজারের অবস্থা আরো ভয়াবহ এখানে ক্রেতা- বিক্রেতা কারো মুখেই মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই মানুষ শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে জঠলা তৈরী করেই কেনাকাটা করছেন।

এ বিষয়ে একাধিক মাছ বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জিজ্ঞেষ করলে তারা জানায়, মোগো দেশে কোন করোনা নাই, সরকার শুধু শুধু লকডাউন দেয়। মাস্ক পড়লে মোগো শ্বাস- প্রশ্বাস গরম হইয়া যায় হ্যার লইগ্যা মুহে মাস্ক পড়িনা। আর আল্লাহ মোগমত গরীবেরে করোনা দেয় না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, মরনঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমন থেকে আমাদের বাচতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পড়ে পরিস্কার- পরিচ্ছন্নভাবে চলতে হবে।

লকডাউন চলমান থাকলেও আমতলী পৌরশহর এবং উপজেলার সর্বত্র মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মুখে মাস্ক পড়া এবং লকডাউন মেনে চলার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন করনিয় আছে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছেনা বলে একাধিক শিক্ষিত মহল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানায়।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, লোকজনকে মুখে মাস্ক পড়তে, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে আরো উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছি। মুখে মাস্ক পড়তে ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

সর্বশেষ