১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

গল্পঃ নির্জন দুপুর

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

শুভজ্যোতি মন্ডল মানিক:

পৌষ মাস,শীতল হাওয়া শনশন বেগে ছুটছে। ধান কাটা ধান মাড়াই খড়ের গাদি দেয়া কাজ শেষ।বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে কবুতর ঘুঘুর দল কিছু একটা খুঁজছে। বোধহয় ধানের আটি বাধার সময় যে দু’চারটে ধান পড়ে গিয়েছিলো ওগুলো কুড়িয়ে খায় ওরা।যতোদূর চোখ যায় দেখা মেলে সারি সারি নাড়ার পাঁজা।ঝাউ ডাঙ্গা গ্রামের ঘর গুলো নাড়ার ছাউনি। আশুতোষ মহন্ত এ গাঁয়ের বাসিন্দা। নিজের জমি থেকে এক আঁটি নাড়ার বোঝাও বাড়িতে তোলা হয়নি তার।যে কারনে শুক্রবার নাড়ার আঁটি বাড়িতে তুলবে বলে স্থির করেছে।কয়েকজন কৃষাণ ঠিক করে শুক্রবার নাড়ার আঁটি বেঁধে বাড়িতে আনার কাজ শুরু করলো। দুপুর ২ টা পর্যন্ত হরদম কাজ চললো।কৃষানেরা স্নান সেরে খেয়ে দেয়ে বাড়ি ফেরার গোছগাছ করছে।মাঠে আঁটি বাঁধা এক আঁটি নাড়া রয়ে গেছে,এটা না এনে মহন্ত মশাই স্থির হতে পারছে না।মহন্ত মশাই সরু মেঠো আইল দিয়ে মাঠের দিকে হাঁটছেন আর মনে মনে ভাবছেন এক জনকে পেলে হয়,নাড়ার বোঝা মাথায় তুলে দিতে বলবে।নাড়ার আঁটির কাছে গিয়ে চারিদিকে লক্ষ্য করলো তেমন কেউ নেই মধ্য মাঠে।অবশ্য দূরে একজনকে দেখতে পেয়ে উচ্চস্বরে ডাক দিলো,ইশারায় বুঝিয়ে দিলো নাড়ার বোঝাটি মাথায় তুলে দিতে হবে। কাছে আসতেই দেখে পরিচিত বশির শেখ,পাশের গ্রামে থাকে। বশির শেখ নাড়ার বোঝাটি মাথায় তুলে দিতে দিতে হেসে উঠলো।আশুতোষ মহন্ত মুহুর্তের জন্য চমকে উঠে খেয়াল করলো জোড়া চোখ মনি হীন কঙ্কাল,আস্ত শ্বেত মুলার মতো দাঁত;খুলিহীন বিশ্রী দেহধারী কেউ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে যার উচ্চতা মহন্ত মশাইয়ের চেয়ে কয়েক গুন।নাড়ার বোঝা মাথা থেকে পড়ে গেলো,আশেপাশে চেয়ে দেখে কেউ নেই; মধ্যমাঠে একা দাঁড়িয়ে।মাথাটা ঝিমঝিম করছে পাদুটো টলছে মহন্ত মশাইয়ের।কোনমতে বাড়ি এসে শুইয়ে পড়ে,সবাইকে কাছে ডাকে।চোখের সামনে যা ঘটেছে তার বর্ননা দিতে দিতে বিছানা নোংরা করে ফেলে,রক্তবমি শুরু হয়।চোখ দুটো নিভু নিভু প্রদীপের মতো করছে।সকলে বলে ওঠে বশির শেখ মরেছে বছর পাঁচেক।

শুভজ্যোতি মন্ডল মানিক(শিক্ষক), মোড়েলগঞ্জ- বাগেরহাট,

সর্বশেষ