১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চঞ্চলের বক্তব্যে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ক্ষোভ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

আব্দুল্লাহ আল মামুন(এ আল মামুন), বিনোদন ডেস্কঃ

ঢালিউডের প্রেক্ষাগৃহে গেল শুক্রবার (২৯ জুলাই) মুক্তি পেয়েছে আলোচিত সিনেমা ‘হাওয়া’। প্রেক্ষাগৃহগুলোতে যাচ্ছে ‘হাওয়া’ টিম। সিনেমা মুক্তির প্রথমদিন বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে গিয়ে এক বক্তব্য দিতে গিয়ে ছোট পর্দার অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘হাওয়া’ পিওর বাংলাদেশের সিনেমা। বাংলাদেশে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ নকল সিনেমা তৈরি হয়েছে। এখনও সেই স্টাইল ফলো করে অনেকে নির্মাণ করছেন। ‘হওয়া’ যারা দেখবেন, আপনারা সত্যি সত্যি যদি সিনেমা বুঝেন- তাহলে বুঝতে পারবেন যে, ‘হাওয়া’ সিনেমা পিওর বাংলাদেশের সিনেমা।

নিজের সিনেমার প্রশংসা করতে গিয়ে ছোট পর্দার এই অভিনেতা বড় পর্দার সব সিনেমা নিয়ে আক্রমণমূলক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চঞ্চলের এই বক্তব্য মুহুর্তে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে যায়। বড় পর্দার সব সিনেমা নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। চঞ্চলের এমন মন্তব্যে নিন্দা জানিয়েছেন অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা।

চঞ্চল চৌধুরীর বক্তব্যর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা সায়মন তারিক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, কাউকে ছোট করে বড় হ‌ওয়া যায় না। গত দুদিন আগে টেলিভিশন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ‘হাওয়া’ সিনেমা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, এতদিন এ দেশে নকল সিনেমা নির্মাণ হত। নকলের যুগ শেষ। ‘হাওয়া’ সম্পূর্ন নতুন গল্পের সিনেমা। এই রকম সাবজেক্ট নিয়ে এ দেশে আর কোনো সিনেমা নির্মাণ হয়নি।

আমি সবিনয়ে চঞ্চল চৌধুরীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাই। ‘হাওয়া’ নতুন কোনো গল্পের সিনেমা নয়। আশির দশকে নায়ক রাজ রাজ্জাক ‘অভিযান’ নামে যে সিনেমাটি নির্মাণ করেছিলেন ‘হাওয়া’ সিনেমাটি তারই কপি গল্প। ‘অভিযান’ সিনেমাটির পুরোগল্প ছিল ট্রলারে। মৎস্যজীবীদের নিয়ে। তাদের জালেই ধরা পরে রোজিনা। রোজিনাকে ঘিরেই গল্প এগিয়ে চলে। ‘হাওয়া’ সেই গল্পের অনুকরণে নির্মিত সিনেমা।

তিনি আরো লিখেন, আজ সুমন যে ‘হাওয়া’ বানিয়েছেন, তার অনেক আগেই রাজ্জাক সাহেব এমন সিনেমা বানিয়ে দেখিয়েছেন। চঞ্চল চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ অভিনেতার কাছে এমন মন্তব্য আশা করিনি। নিজের অভিনীত সিনেমার প্রচারণা করতে গিয়ে দেশের মুক্তিপ্রাপ্ত সব সিনেমাকে ছোট করে কথা বলা নেহায়েতই হীনমন্যতার প্রকাশ।

চলচ্চিত্র নির্মাতা দেওয়ান নাজমুল বলেন, চঞ্চল চৌধুরী কে? এমন প্রশ্ন আসলে লক্ষ কোটি মানুষ বলবে সে নাটকের মানুষ। এটাই তার পরিচয়। হঠাৎ করে সিনেমায় নাম লেখিয়ে ২-৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবুও দর্শক কিন্তু এখনও তাকে নাটকের লোকই বলেন। চঞ্চল চৌধুরী একজন নন্দিত নাটকের নায়ক, পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন অভিনেতা। আপনার কাছে আমরা নন্দিত কথা আশা করব।

প্রশ্ন রেখে তিনি আরো বলেন, আপনার আগের সিনেমাগুলো কী নকল ছিল? আপনার সিনেমা ছাড়া অন্য কারো সিনেমা কী আপনি দেখেন? দয়া করে আমাদের নায়ক রাজ রাজ্জাক স্যারের ‘অভিযান’ দেখবেন। তা হলে আপনার কথার সত্যতা খুঁজে পাবেন। দয়া করে নিজেকে বড় করতে গিয়ে চলচ্চিত্রের অন্যকে ছোট না করার অনুরোধ রাখছি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা এম. এন ইস্পাহানী, সৈকত নাসির, চিত্রনাট্যকার, কাহিনিকার, সংলাপকার আবদুল্লাহ জাহির বাবুসহ আরো অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা চঞ্চল চৌধুরীর কথার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে শুটিং শুরু হয়েছিল মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হওয়া’ সিনেমার। কক্সবাজারে ৪৫ দিন সিনেমাটির শুটিং হয়। পরে করোনার জন্য মুক্তি পিছিয়ে যায়। গেল শুক্রবার সিনেমাটি মুক্তি পায়। গভীর সমুদ্রে একদল জেলের মাছ ধরতে গিয়ে নানা রহস্যময় ঘটনা নিয়ে এগিয়েছে এই সিনেমার গল্প। এতে অভিনয় করেছেন- চঞ্চল চৌধুরী, শরীফুল রাজ, নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

সর্বশেষ