৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে বাড়ছে সামুদ্রিক মাছের চাহিদা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দক্ষিণাঞ্চলের নানান পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র ঘিরে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ-এর ব্যবসা বেশ জমজমাট। পর্যটক কিংবা ভ্রমণ পিপাসুদের খাদ্য তালিকায় এ ধরনের খাবারের অবস্থান এখন শীর্ষে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরণের মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ খাবারের আয়োজন তরুণ-তরুণীদের বেশি আকৃষ্ট করছে। তবে ফ্রাই বা ভাঁজা খাবারের তালিকায় কাঁকড়ার কদরও চোখে পড়ার মতো।

স্থানীয় সূত্র বলছে, গোটা বরিশাল বিভাগের মধ্যে পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত সাগরকন্যা কুয়াকাটায় বাণিজ্যিকভাবে পর্যটকদের জন্য প্রথম ফ্রাই খাবারের যাত্রা শুরু হয়। সে যাত্রায় কাঁকড়ার পাশাপাশি চিংড়ি, ইলিশ ও রূপচান্দা মাছের ফ্রাই করেই খাওয়াটা বেশি পছন্দ করতো কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা। আর এ আয়োজনও মিলত শুধু বীচ সংলগ্ন বিশেষ কয়েকটি স্থানে হাতেগোনা কয়েকটি টং ঘরে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ফ্রাইয়ে সঙ্গে বারবিকিউ খাবারের নামটিও যুক্ত হয় কুয়াকাটাতে। আর এ আয়োজনে কাঁকড়া, চিংড়ি, ইলিশ, রূপচান্দার সঙ্গে সঙ্গে লইট্যা, টুনা, কোরাল, সাদা পোয়া, কালা পোয়া, হাউসপাতা, মাইট্টাসহ বেশকিছু মাছের নাম।

পাশাপাশি বর্তমান সময়ে বীচ সংলগ্ন টংঘরের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনি পর্যটনকেন্দ্রটিতে গড়ে ওঠা আবাসিক হোটেল কিংবা নামি-দামি রেস্তোরাতেও মিলছে কাঁকড়াসহ বিভিন্ন মাছের ফ্রাই ও বারবিকিউ। যদিও সাগরকন্যা কুয়াকাটা ছাড়াও বরিশাল বিভাগের অনেক পর্যটন স্পটেই এখন সামুদ্রিক মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ এর ব্যবসা শুরু হয়েছে। আর সেগুলোও বেশ ভালোভাবে চলছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বরিশাল নগরের ত্রিশগোডাউন বদ্ধভূমি সংলগ্ন এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর তীরে বর্তমানে ২ থেকে ৩টি এ ধরনের দোকান রয়েছে। যারা মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ করে খাওয়ানোর আয়োজন করে চলেছেন ভোক্তাদের জন্য। তবে কুয়াকাটার মতো এখানে বহু প্রজাতির মাছের আয়োজন হয় না, ব্যবসায়ী আরও জানান, আগতদের চাহিদা অনুযায়ী সবধরনের মাছ সংগ্রহ করা সম্ভব। তবে এখানে বেশিরভাগ মানুষ কাঁকড়া ফ্রাই, রূপচান্দা, ইলিশ ও চিংড়ি ফ্রাই করে খেতে পছন্দ করেন। আর কোরাল মাছের বারবিকিউর খুব চাহিদা রয়েছে।

এদিকে সাগরকন্যা কুয়াকাটার ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মাছের সংযোজন ঘটছে কুয়াকাটায়। বর্তমানে বহু প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় এখানে। যার অন্যদেশে বা বৈজ্ঞানিকভাবে নাম একটা কিন্তু পরিচিত হচ্ছে স্থানীয় নামে। তবে সি-বিচে আসা পর্যটকদের জনপ্রিয়তায় রয়েছে টুনা, কোরাল, বিভিন্ন ধরনের চান্দা, ইলিশ চিংড়ি, কোরাল মাছ। আর কাঁকড়া ফ্রাইয়ের জনপ্রিয়তা আগে থেকেই এখানে বেশি। আকারভেদে কাঁকড়া ৪০ থেকে ১ শত টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও প্রকার ও আকারভেদে মাছের দর পরে দেড়শত থেকে হাজার পর্যন্ত।

গত প্রায় ১ দশক ধরে সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে নিয়মিত ঘুরতে আসেন বরিশাল নগরের বাসিন্দা অলিউর রহমান। তিনি জানান, কুয়াকাটায় শুরুতে যখন তিনি আসতেন তখন জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বিচের কাছাকাছি কয়েকটি টং ঘরে এবং লেম্বুর বনের একটি টং ঘরে কাঁকড়া, চিংড়ি’র ফ্রাই খেতে দেখতেন পর্যটকদের।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন উভয়স্থানেই এসব খাবারের দোকান যেমন বেড়েছে-তেমনি ফ্রাইয়ের সঙ্গে বারবিকিউর প্রচলনও ঘটেছে। আর এখন তো বিভিন্ন আবাসিক হোটেলেও এসব মাছের ফ্রাই ও বারবিকিউ করে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে খরচ কম পড়ায় বিচের কাছে নয়তো লেম্বুর বনে বেশিরভাগ পর্যটক গিয়ে থাকেন। আর এসব জায়গাতে শিশু, নারী পুরুষসহ সব বয়সী পর্যটকদের ভিড়ও প্রচুর হয়।

বেড়াতে বা ঘুরতে গিয়ে বারবিকিউ’র আয়োজন আলাদা আনন্দ জোগায় জানিয়ে রুমানা নামের এক নারী পর্যটক বলেন, সবাই মিলে আড্ডা দিতে দিতে মাছ বা মুরগির বারবিকিউ চোখের সামনে বসে তৈরি করে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আর স্বাদে অতুলনীয় হলে তো অতৃপ্তই মনে হবে নিজেকে।

আমিনুল ইসলাম নামে শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী বলেন, সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে তো মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ’কে ঘিরে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ হয়েছে। সেখানে যেমন এই খাবারের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বেড়েছে, তেমনি স্থানীয় বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। কিন্তু এখন তো বরিশাল নগরেও এ ব্যবসা শুরু হয়েছে। ফলে বরিশালেও বসেও ইচ্ছে করলে শত মাইল দূরের সেই সাগরকন্যার আমেজ এবং মাছ ফ্রাই ও বারবিকিউ’র স্বাদ নিতে পারছি।

সর্বশেষ