৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মঠবাড়িয়ায় এক সপ্তাহেও উদঘাটন হয়নি ত্রিপল মার্ডার রহস্য

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুর প্রতিনিধি : এক সপ্তাহ পার হলে এখনো পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার রহস্য উদঘাটন হয়নি। গত ৩১ জুলাই এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়।

জানা গেছে, উপজেলার অটোরিকশাচালক আয়নাল হক (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের ৩ বছরের মেয়ে আশফিয়া দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। হত্যার এক সপ্তাহ পার হলেও এ খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ। পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের আপন ভাই কাঁচামাল ব্যবসায়ী হেলাল হাওলাদার (৪০), চাচাতো চাচা ভ্যানচালক আব্দুল মালেক হাওলাদার (৫৫), চাচাতো ভাই কৃষক বেলাল (৪০), প্রতিবেশী মাহবুব (১৯), আব্দুর রহিম (১৬) ও শামিমকে (২৬) জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো রহস্য উদঘাটন হয়নি।

এদিকে চাঞ্চল্যকর এই তিন খুনের ঘটনায় ওই দিন রাতে নিহত আয়নালের শ্বশুর (খুকুর পিতা) চিত্রা গ্রামের আবুল কালাম সর্দার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এর আগের দিন ৩০ জুলাই রাতে (বৃহস্পতিবার) এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে সিআইডি, ডিবি, পিবিআই, র‌্যাবসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম এ খুনের নেপথ্য কারণ ও খুনিদের গ্রেফতারে কাজ করছে। কিন্তু হত্যার নেপথ্য ক্লু এখন পর্যন্ত বের করা এখনো সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে এলাকাবাসী জানান, নিহত আয়নালের বাবা উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রত্তন হাওলাদার ১৫/১৬ বছর আগে মারা যাওয়ার পর থেকেই তার ৪ ছেলের মধ্যে সু-সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। আয়নালের ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী জয়নাল (২৮) দু’মাস আগে প্রবাসে ব্রেন স্ট্রোকে মারা যান। এক মাস আগে দেশে এনে ওই ভাইয়ের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এ শোক কাটতে না কাটতেই দরিদ্র পরিবারের আরেক ভাই সপরিবারে খুন হওয়ায় এলাকাবাসী ও পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দা সমাজসেবক বৃদ্ধ মোবারক হোসেন (৭০) বলেন, শিশু মেয়েসহ ওর বাবা-মায়ের নির্মম মৃত্যু ঈদুল আজহার আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ়! বিশ্বাসই করতে পারছিনা কি কারণে একটা দরিদ্র পরিবারের খেটে খাওয়া যুবক, তার স্ত্রী ও শিশু বাচ্চাকে এভাবে হত্যা করা হলো?

তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জ ম মাসুদুজ্জামান মিলু বলেন, ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যের সুষ্পষ্ট কারণ পাওয়া না গেলেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আশাকরি শিগগিরই রহস্য উদঘাটন হবে।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খাঁন বলেন, এ ঘটনার পর থেকেই মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে র‌্যাব, সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ থানা পুলিশের ৫টি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ তিন খুনের নেপথ্যের কারণ ও খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে অনেক তথ্য আমরা পেয়েছি। যা তদন্তের স্বার্থে বলা যাচ্ছে না।

উলেখ্য, গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) সকালে উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের একটি বসতঘর থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় অটোরিকশাচালক আয়নাল তার স্ত্রী খুকু মনি ও তাদের একমাত্র মেয়ে আশফিয়ার জুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

সর্বশেষ