১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মঠবাড়িয়ায় খাস জমিতে অবৈধ দোকান ঘর নির্মানের অভিযোগ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

মোঃ শাহজাহান, মঠবাড়িয়া :: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌস এর বিরুদ্ধে ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা বহির্ভূত সরকারি জমিতে পেশিশক্তির বলে জবরদখল করে ১৬ টি দোকান ঘর নির্মাণ করে ডিসিআর বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জনস্বার্থে পৌরসভার বাসিন্দা মজিবর রহমান ও হারুন-অর-রশিদ অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার জন্য ভূমিমন্ত্রী সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের পৌর শহরের কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশন এর ব্রিজ সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে পূর্বের জরাজীর্ণ মাছ বাজার ভেঙে দিয়ে সেখানে ২৬ শতাংশ জমিতে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের( এডিবি) অর্থায়নে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ইজিপি টেন্ডার এর মাধ্যমে বহুতল ৫ তলা ভবন নির্মাণ করছেন। আঞ্চলিক মহাসড়ক ও নবনির্মিত ভবনের উত্তর পাশে যারা সরকারের কাছে থেকে ডিসিআর বন্দোবস্ত নিয়ে দোকান ঘর তুলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল তাদেরকে সুকৌশলে ভবনের মধ্যে ব্যবসা করার ঘর দেয়ার শর্তে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকান ঘর ভেঙে দেয়। এরপর পৌর পরিষদ তথাকথিত একটি রেজুলেশন করে উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ভবন নির্মাণের ডিজাইনের বাহিরে ব্যবসায়ীদের ভেঙে দেয়া ওই জমি ও ভবনের উত্তর পাশে আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি জবরদখল করে সেখানে ১৬টি দোকানঘর নির্মাণ করে ডিসিআর বাণিজ্য করার পায়তারা করছেন পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহ্মেদ ফেরদৌস। এ ছাড়া তিনি নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী মজুদ রাখার অজুহাতে ওই ভবনের পিছনে অর্ধকোটি টাকার একটি বড় পাকা ওয়াল টিনশেড ঘর নির্মাণ করে দখল করে নেন। পৌর মেয়রের অবৈধ দখল ও ডিসিআর বাণিজ্য নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা -কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খান জানান, ফুটপাত ও সরকারি জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ সম্পূর্ণ বেআইনি।বাসের সাথে একটি টেম্পু ক্রসিং হওয়ায় সময় পথচারী কিংবা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কোথাও গিয়ে দাঁড়াতে পারবেনা। ওখানে দোকান ঘর কোন সচেতন নাগরিকের কাম্য নয়। আমাদের সকল অর্জন ম্লান হয়ে যাবে।জনস্ববার্থের পরিপন্থী কোন কাজ জনগন মেনে নেবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পাকা স্থাপনা নির্মাণের সময় শুরুতেই আমি বাঁধা দিয়েছিলাম। পরে আমাকে পৌর কর্তৃপক্ষ অবহিত করেন যে, তাদের সাথে সরকারের নাকি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা স্থাপনা নির্মাণ করছেন।। তবে ওই দোকান ঘর নির্মানের ফলে জনসাধারণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, ডিজাইনের বাইরে ও মহা সড়কের পাশে কোন ধরনের দোকানঘর নির্মাণ করা যাবে না। অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার জন্য মঠবাড়িয়ার ইউএনও কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পিরোজপুর -৩ মঠবাড়িয়া আসনের সংসদ সদস্য মুঠোফোনে জানান, আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে ভুমি মন্ত্রী ও সচিব কে অবহিত করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে উচ্ছেদের নির্দেশনা দিয়েছেন কিন্তু জেলা প্রশাসক কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না সেটা আমার বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র রফিক আহমেদ ফেরদৌসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মহাসড়কে যানচলাচল কোন ক্ষতি হবে না।ওই জায়গাটি ফাঁকা থাকলে মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলতে পারে সে কারণে দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।এডিবির অর্থায়ন নির্মাণাধীন মাছ বাজার বহুতল ভবনের আশেপাশে খাস খতিয়ানের জায়গায় অবৈধ দোকানঘর নির্মাণ করা যায় কি না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আসলে বহুতল ভবনের পাশে দোকান ঘর করা যায় না।

তবে পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৬ শতাংশ জমিতে জেলা প্রশাসকের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ভবনের উত্তর পাশের সরকারি জমি ভাসমান দোকানদারের দখলে না যায় সেজন্য পৌরসভা সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে। হয় ওখানে দোকানঘর হবে না হয় পাকা দেওয়াল হবে। আর প্রশাসন যদি মনে করে দোকানগুলো অবৈধ তবে তারা ইচ্ছে করলে ভেঙে দিতে পারেন।’

সর্বশেষ