পিরোজপুর প্রতিনিধি ::: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ভূমিহীন আবদুল্লাহ আল মামুন (৫৩) দুই যুগের বেশি সময় ধরে মসজিদে বসবাস করছেন। তিনি পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ড গোরস্থান জামে মসজিদে এ দীর্ঘ সময় যাবত মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালনসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা, দোয়া, তসবিহ পাঠ করে দিন কাটাচ্ছেন। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মসজিদে তার দেখা মেলে।
পৃথিবীর কোনো লোভ-ভাবনা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। কেউ আগ্রহ করে খাবার দিলে খান। খাবার না পেলে আল্লাহর ধ্যানে মসজিদে দোয়া করে দিন কাটান। পৃথিবীতে একমাত্র বোন ছাড়া আর কেউ নেই। কখনো কারো কাছে সাহায্য চাইতেও দেখা যায়নি। সহায় সম্পত্তি বলতে কিছু নেই। এমনকি বিয়েও করেননি।
বরগুনার বামনা উপজেলার খোলপটুয়া বান্ধাঘাটার মৃত মো. নাদের আলী দরবেশের ছেলে বিনয়ী স্বভাবের আবদুল্লাহ আল মামুন মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়ে গেছেন। সহায় সম্পত্তি না থাকার কারণে অভাবের তাড়নায় প্রায় ৩৫ বছর পূর্বে মঠবাড়িয়া আসেন। তার পিতা মো. নাদের আলী মৃত্যুবরণ করলে পৌর শহরের মাটিয়া জামে মসজিদ কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আবদুল্লাহর জীবনাচরণের খবর পেয়ে তার সঙ্গে গোরস্থান জামে মসজিদে দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, সরকার একটি ঘর দিলে ভালো হয়।
গোরস্থান জামে মসজিদের উপদেষ্টা মো. মনির আকন বলেন, আবদুল্লাহর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটান ও মসজিদের সেবা করেন; তার জন্য একটি ঘর দরকার।
মসজিদের ইমাম জায়েদুল ইসলাম হানিফ বলেন, আবদুল্লাহ বহু বছর পূর্ব থেকে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন ও স্বেচ্ছায় মসজিদের খেদমত করে আসছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, সরকার নির্ধারিত স্থানের ঘরে তিনি যেতে রাজি নন। তিনি পৌর শহরের মধ্যে ঘর দাবি করেন; এতে সরকারি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আবদুল্লাহ আল মামুন যদি সরকারি নির্ধারিত স্থানের ঘরে যেতে চান, তাহলে যেকোনো সময় তাকে ঘর দেওয়া যাবে।
