১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মাসুদ রানার মৃত্যুতে সাংবাদিক অঙ্গনে বইছে শোকের মাতম

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: শরীয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে তছনছ হয়ে গেছে সাংবাদিক মাসুদ রানার (৩৮) সাজানো সংসার।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর ৪টায় জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক মাসুদ রানাসহ আরও পাঁচজন নিহত হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী ও স্বজনদের নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল মাসুদ রানা। পথে জাজিরায় পদ্মা সেতু টোলপ্লাজার কাছে গতিনিরোধক পার হতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাকের পেছনে ঢুকে দুমড়ে-মুচড়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ছয়জন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাসুদ রানা ও তার স্ত্রী মালা রাখাইনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে। বিয়ের পর স্ত্রীকে উপহার স্বরূপ ‘কাচ্চিখানা’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট করে দেন তিনি। প্রতিদিনের মতো আজও সকালে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা তার স্ত্রী মালা রাখাইনের। অথচ সে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপেক্ষা করছে তার স্বামীর লাশের জন্য।

মাসুদ রানার স্বজন মেহেদী বলেন, তাদের ৩ বছরের সাজানো সংসার ছিল। তাদের কোনো সন্তান ছিল না। ভালোই চলছিল তাদের দিনকাল। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। যা কোনো ভাবেই আমরা মানতে পারছি না।

মেহেদী আরও বলেন, আমরা এখন মাসুদ ভাইয়ের স্ত্রীসহ জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছি। এখান থেকে মরদেহ নিয়ে তার নিজ গ্ৰামের দিকে রওনা হবো। তার গ্ৰামের বাড়ি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নে। এছাড়া মাসুদ রানা ও মালা রাখাইন বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোড এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতো।

সাংবাদিক মাসুদ রানা দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার বরিশাল ব্যুরোর দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মাসুদ রানার মৃত্যুতে বরিশাল সাংবাদিক অঙ্গনে বইছে শোকের মাতম। সহকর্মীর মৃত্যুর সংবাদ যেন কোনো ভাবেই কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

মাসুদ রানার সহকর্মী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, মাসুদ রানার মতো পরোপকারী বন্ধুসুলভ মানুষ খুব কমই ছিল। প্রতিদিন দেখা সাক্ষাৎ হতো, বিভিন্নস্থানে একসঙ্গে প্রোগ্ৰামে যেতাম। হঠাৎ করেই তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আগামী শুক্রবারও আমাদের একসাথে একটি প্রোগ্ৰাম করার কথা ছিল।

আরেক সহকর্মী এন আমিন রাসেল বলেন, মাসুদ আমারা বন্ধু ছিল। প্রতিদিন কাজ শেষে একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। ওর মতো ভালো বন্ধু হারিয়ে আমরা সহকর্মীরাসহ পুরো বন্ধুমহল শোকাহত।

শরিয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে একটি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, জাহানারা বেগম (৫৫), তার মেয়ে লুৎফুন নাহার লিমা (৩০), স্বাস্থ্যকর্মী ফজলে রাব্বি (২৮), গাড়িচালক জিলানি (২৮), গাড়ির হেলপার রবিউল ইসলাম (২৬) ও সাংবাদিক মাসুদ রানা (৩০)।

সর্বশেষ