৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজাপুরের বিষখালি নদীতে হঠাৎ ভাঙ্গনে ৬টি দোকান বিলীন

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালি নদীতে হঠাৎ নদী ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে ছয়টি দোকানঘর নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। এদের মধ্যে একটি মুদীমনোহারি, একটি ঋষি ও বাকি গুলো চায়ের দোকান ছিল। সোমবার দুপুরে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিশখালী নদী সংলগ্ন বাদুরতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার পর বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলো নাসির হাওলাদার, জুয়েল শরীফ, শাহজাহান শরীফ, জামাল হাওলাদার, আবু খলিফা ও বাবুল ঋষি। প্রত্যক্ষদর্শী মো. রুহুল আমিন, তরিকুল ইসলাম সুমন ও আব্দুল গফুর জানায়, দুপুরে হঠাৎ বিশখালী নদীতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে কয়েকটি দোকান নিয়ে মাটি দেভে পানিতে ভেসে যায় মালপত্রসহ দোকানগুলো। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নদী থেকে দোকান মালিকরা দোকানঘরও সহ মালামাল উদ্ধার করে। ততক্ষনে অনেক মালপত্র ভেসে যায়।
মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জালাল হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজারের দোকানগুলো ভেঙে বিলীন হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ দুপুরে ৬টি দোকান বিলীন হয়ে গেছে। এখনও ওই বাজারের অনেক দোকান ঝুকিতে রয়েছে। কয়েক দফা জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত স্থায়ী বাধ নির্মান করা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেছি তাদের জন্য পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে বিষখালী ও হলতা নদীর জোয়ের পানি ৩-৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৭টি গ্রাম ও শতাধিক আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর প্লাবিত হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে কাঠালিয়া গ্রামের বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাস্তা ও চিংড়াখালী খালের বাঁধ। গ্রামীন কাঁচা পাকা ১০টি রাস্তা দেঁভে গর্ত হয়ে সংযোগ বিচিছন্ন রয়েছে এ সকল গ্রামের। ফলে হাজার হাজার মানুষের চরম দূর্ভোগ ও আতংকের মধ্যে দিন কাটছে। রোববার থেকে মুশল ধরে বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া, বিষখালী ও হলতা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২৭টি গ্রাম। জোয়ারের পানিতে উপজেলার আউড়া, শৌলজালিয়া ও আওরাবুনিয়া আশ্রায়ন প্রকল্পের শতাধিক ঘর পানিতে ভাসছে। ২/৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে এ সব ঘর। উপজেলা পরিষদের সবগুলো অফিস ভবন, নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন, কাঠালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, কাঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণ কেন্দ্র, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র, কাঠালিয়া লঞ্চ ঘাট, সিকদার পাড়া, পশ্চিম আউরা জেলে পাড়া, আমুয়া হাসপাতাল ও আমুয়া বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান দুই এক দিনের ভিতর পানি না কমলে রোপা আমন ধান পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছেন, তাদের ৪০ শতাংশ মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। ফলে এ সকল খামারিদে অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, কাঠালিয়া উপজেলাকে সরকারের পক্ষ থেকে কোস্টাল এরিয়া ঘোষনা করা এবং ভেরিবাঁধ নির্মান করা না হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সমাধান সম্ভব নয়। ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, বিষখালী ও হলতা নদীর পানি বিপদ সীমার প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সর্বশেষ