এ আল মামুন, বিনোদন ডেস্কঃ
অনন্ত জলিল একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নায়ক ও প্রযোজক। সম্প্রতি ‘দিন দ্য ডে’ ছবির জন্য আলোচনায় রয়েছেন তিনি। অনন্ত জলিল অনেক আগেই তার সিনেমাতে তার অভিনয় দিয়ে দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছেন। তার ভক্ত-অনুসারীরা প্রায়ই তার কাজ নিয়ে আলোচনা করে থাকেন।
এদিকে এবারই হয়েছে তাকে নিয়ে সমালোচনা। যদিও সেটা অনন্ত জলিলের ব্যক্তিগত বিষয় না, এটা সিনেমারই প্রসঙ্গ। তবে নিন্দুকেরা সমালোচনা করলেও অনন্ত জলিল তাদেরকে ভালোবাসাই দিতে চান।
কেমন চলছে অনন্ত জলিলের সিনেমাটি। সরেজমিন ঘুরে সে তথ্য নিয়েই আজকের প্রতিবেদন-
স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে ‘দিন দ্য ডে’। ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদ আলম এসেছেন ছবিটি দেখতে। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি সিনেমাটি দেখার জন্য অনেক দিন টিকিট কাটার জন্য চেষ্টা করেছি। অবশেষে আজ মিলেছে। আমি অনন্ত জলিলের আগের সিনেমাগুলোও দেখেছি। তবে এই সিনেমাটি সর্ম্পকে বলবো এটি স্পেশাল। ইরানি ডিরেক্টরের (মর্তজা আতাশ জমজম) ডিরেকশন, সিনেমার মেকিং ও ক্যামেরার কাজ এবং ডায়লগ দারুণ।
সিনেমার কালারগ্রেডিং ও সিনেমাগ্রাফি অনেক উন্নত/স্বচ্ছ।ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিকও ভালো ছিলো। তুর্কি, আফগানিস্থান, ইরানের মতো লোকেশনে সিনেমাটির দৃশ্যয়ন চোখে আরাম দিয়েছে। সিনেমাটিতে হলিউড হলিউড টাইপের ফিল পাওয়া যায়। সিনেমায় লার্জ স্কেলে এরেন্জমেন্ট ছিলো যা সচারাচর বাংলা সিনেমায় আগে দেখা যায়নি (হেলিকপ্টার, গাড়ি, ইয়োট, স্পিড বোট, কন্টিনার লরি, মিসাইল, মরুভূমিতে কার চেজিংয়ের সিনগুলো)। একশন সিকোয়েন্স গুলোতে নতুনত্ব, একশন সিনগুলো বেশ যত্নের সাথে নেওয়া হয়েছে(বেশিরভাগ একশন অনন্তই করেছিলো স্টান্ট ডাবল ব্যবহার করেনি লেগেছে)। সিনেমার ৩টি গান “বর্ষা চোখে”, “প্রিয়তমা”, “শুধু তোমাকেই চাই” গানগুলোর লিরিক্স ও সুন্দর লোকেশনে শুট করা শুনতে ও দেখতে ভালো লেগেছে।
অনন্ত জলিল ও বর্ষা বাদে বাকি কলাকুশলীদের অভিনয় মুগ্ধ করেছে। খলনায়ক আবু খালিদ চরিত্রে অভিনয় করা লোকটি ছিলেন দারুণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই ছবিটি নিয়ে দেখছি শুরু থেকে আলোচনা-সমালোচনা,তর্ক-বিতর্ক,হাসি-রসিকতা চলছে। একটি সিনেমার জন্যে আমি মনে করি তা ইতিবাচক। প্রচার হয়। সাম্প্রতিককালে কোনো সিনেমা নিয়ে এমনটা দেখা যায় নি। বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্র জগতের মেধাহীন, নিম্নরুচির তথাকথিত নির্মাতা-অভিনেতারা একটি ভালো সিনেমা বানানোর পেছনে চিন্তা-মেধা-শ্রম ব্যয় করছেন না। তারা সর্ব শক্তি দিয়ে অনন্ত জলিলকে টেনে নামানোর চেষ্টা করছেন। অসৎ অযোগ্য মেধাহীনরা এই কাজটি সবচেয়ে ভালো পারে। এখন মনে হয় কি বস্তপচা বাংলা সিনেমা চলে না বলে, ‘দিন দ্য ডে’র সাফল্য দেখে কারো কারো গায়ে খোঁচা লেগেছে।’
এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রমজান নামে একজন চাকুরিজীবির সাথে তিনি বলেন, যারা সিনেমার ভালো চাই না তারা হয়তো এসব বলছে। আমি আমার দেশের ভাষার সিনেমা দেখছি, অতএব আমার কাছে একটা সুন্দর গোছালো সিনেমা মনে হয়েছে। আমি বলবো, আরে ভাই সারা বছর সিনেমা নিয়ে কোন আলোচনা হয়না। আজ ‘দিন দ্য ডে’ আলোচনা দেখে সবার ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
সাইফুল্লাহ নামের একজন বলেন, সিনেমা নিয়ে কিছু বলছি না। আমি বলবো ভাই বোনরা সিনেমাটা দেখে মন্তব্য করেন। এইভাবে দর্শক হলমুখি কোন দিন দেখছেন। ও আজ দিন দ্য ডে আলোচনায় এসে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে বলে, অনেকের গলার কাটা হয়ে গেছে।
রমিজ নামের একজন বলেন, আমি এই পর্যন্ত কোন টিকিট না পেয়ে ছবিটি দেখলাম। আমার কাছে কষ্ট লাগলো এই ধরনের কোন সিনেমা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে দেকি নাই। এতো সুন্দর মেকিং কালার ডায়লগ। সব কিছু আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। আর আমরা যারা ছবিটি দেখলাম কেউতো খারাপ বললো না। অনন্ত জলিলের প্রসংশা করেই বের হতে দেখলাম। তাই চিন্তা করলাম তার জনপ্রিয়তা দেখে নিন্দুকের চোখ কারো কারো কপালে উঠছে।
সামাদ নামের একজন বলেন, যে যেটাই বলে আলোচনা করুক না কেন। আনেক দিন পর এতো দর্শকের মধ্যে সিনেমা কম দেখেছি। দিন দ্য ডে দিয়ে অনন্ত জলিল ও বর্ষা জন সমুদ্রো পরিনত করেছে।
খায়ের নামের একজন বলেন, অনেক দিন পর বিকালের শো-র টিকিট কাটতে পেরেছি। কিছু না হলে তো ভাই টিকিট তো কাটতে পারতাম। কে কি ভাবে এটা ভাবার সময় নাই। আমি অনন্ত জলিল ভাইকে বলবো এসব না ভেবেে আগিয়ে যান। দেখছেন না আপনি? সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টারে টিকিটের হাহাকার দেখে অনেকের ঘুম হারাম।
মারিয়া নামের একজন শিক্ষার্থী দর্শকদের ঠেলা দিয়ে সামনে এসে জোর গলায় বলেন, আরে বুঝেন না তাকে নিয়ে এবার মহা আলোচনা থেকেও ঊর্ধ্বে আলোচনা হয়েছে। তা দেখেই তো অনেকে তার সমোলচনা করছে। ঢাকা সহ সকল হল গুলোতে যে উপচে পড়া দর্শকদের ভীর, আর তার যে জনপ্রিয়তা এই জন্য অনেকে তাকে ব্যাক্তিগত আঘাত করার জন্য এতো সমোলচনা।