৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অপার সৌন্দর্যে মোহময় রামনাবাদ নদী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
মেঘমুক্ত নীল আকাশের নিচে অপার সৌন্দর্যে মোহময় রূপ নিয়েছে বৃহত্তর পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ঐতিহ্যের রামনাবাদ নদী। সবুজ তীর্ণলতায় আবৃত সুদীর্ঘ পলিমাটির নদী সৈকত নজর কাড়ছে ভ্রমণ পিপাসুদের। অপরূপ মাধুর্য আর নৈসর্গিকতায় যৌবন ফিরে পেয়েছে নদীটি। প্রকৃতি যেন বিলিয়ে দিয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা আর অপরূপ সৌন্দর্য। সৌন্দর্যের ষোলোকলায় পরিপূর্ণ নদীটি দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে চলছে অনবরত। নদীতে পাওয়া বিভিন্ন ধরনের মাছ আর ফসলের মৌসুমে নদীতে থাকা পানি কৃষিকাজে কৃষকদের চাহিদা পূরণ করছে।
রামনাবাদ নদী দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৮৪০ মিটার এবং নদীটির ধরন এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক রাবনাবাদ নদীর পরিচিতি নম্বর ৮২। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে উপকূলীয় রাঙ্গাবালী অতিক্রম করে এ নদী প্রবাহিত হয়েছে গলাচিপার উপর দিয়ে। রামনাবাদ নদীর নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। তবে রামণ সাধু নামে এক ব্যক্তির নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণ করে শুষ্ক মৌসুমের জন্য জলাধার নির্মাণ করা থেকেই নাকি এ নদীর নাম হয়েছে রামনাবাদ। শীতের শুরুতেই প্রতিদিন নদীর সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন যান্ত্রিক শহরে থাকা মানুষ। দলবেঁধে অনেকে নৌকাযোগে দূর-দূরান্ত ছুটে যায়। অনেকে নদীর বুকেই করছে বনভোজনের আয়জন। রাতের শীতল বাতাস, নদীর গর্জন পথচারীদের উদ্বেলিত করছে প্রতিনিয়ত। সম্ভাবনা আর অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিলেও দখলদারদের নদীর পাড় দখল ও মাটি কেটে নেয়ার দৃশ্য লক্ষণীয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে দূষিত বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলে বিষাক্ত করে তোলা হচ্ছে নদীটিকে। অপার সম্ভাবনার রামনাবাদ নদীকে দখলমুক্ত করে খনন করে দর্শনীয় করতে স্থাণীয়রা একাধিকবার দাবি জানিয়ে আসলেও এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ২০১৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নদীর দুই তীর পরিদর্শনে এসে খনন ও উচ্ছেদ অভিযান শুরুর ঘোষণা দিলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতা ও তৎপরতায় রামনাবাদের নাব্য ও জৌলুস ফিরে আসার বিষয়ে আশার আলো দেখছেন এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। বিভিন্ন সভা সেমিনারের মাধ্যমে নদীটির নাব্য ফিরিয়ে আনা ও নদীর দুই তীরকে দৃষ্টিনন্দিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে গলাচিপা-দশমিনা আসনের সাংসদ এস. এম. শাহজাদা রামনবাদের জৌলুস ফিরে আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে জানান, নির্বিঘ্ন নৌ-চলাচলের মাধ্যমে এলাকাবাসী ও কৃষকরা যাতে নদীটির সুফল ভোগ করতে পারে এজন্য শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গলাচিপা পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিন জানান, দূর দূরন্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়তে নদীটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং নাব্য সংকট রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিপাত একান্ত প্রয়োজন।

সর্বশেষ