বরিশাল বাণী: ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল ৭ই মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বরিশাল জেলা কমিটির উদ্যোগে এ শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বরিশাল জেলা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি বীণা রানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা এ্যাড. এ কে আজাদ, নারী নেত্রী পুষ্প চক্রবর্তী, অধ্যাপক টুনু রানী কর্মকার, অধ্যাপক দুলাল মজুমদার, টিইউসি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা, শ্রমিক নেতা জে কে মুকুল, তুষার সেন, নূর হোসেন হাওলাদার, দোকান কর্মচারী নেতা আবুল বাশার আকন, ছাত্র নেতা কিশোর কুমার বালা, জোছনা বেগম, , কবি অপূর্ব গৌতম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা পাশবিকতা নির্যাতন বৈষম্য রোখ, ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরী, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, দিন মজুরদের সারা বছর কাজ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ষাটোর্ধ শ্রমিকদের পেনশন স্কিম চালু, নারী মুক্তি ও নারীদের দাবী আদায়ের এ লড়াইতে অংশগ্রহণের আহবান জানান বক্তারা।
০১। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমান কাজে সমান মজুরী দিতে হবে এবং গার্মেন্টস্ সহ সকল শ্রমিক কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানী বন্ধ করতে হবে।
০২। ন্যূনতম মজুরী ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত, শ্রম আইনের সংশোধন এবং গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। দর্জি শ্রমিকদের ২০১৮ সালের গেজেট অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।
০৩। পারিবারিক, সামাজিক নির্যাতন ও বৈষম্য দূর কর। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত কর।
০৪। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং শিশু শ্রম বন্ধ করে শিশুদের উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য শিশুদের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
০৫। ফতোয়া বিষয়ক হাইকোর্টের নির্দেশনাকে কার্যকর করতে হবে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা অনুযায়ী সকল নিপীড়কের বিচার দ্রুত সম্পন্ন কর। ‘ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড’ চালু করতে হবে।
০৬। জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সকল প্রকার নির্যাতন ও বৈষম্য দূর করতে হবে। অবিলম্বে ‘সিডিও’ সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।
০৭। বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন, স্যানিটেশন, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা কর।
০৮। ৭২ এর সংবিধানের মূল ভিত্তি এবং নারীর অধিকার বিরোধী সকল অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াও।
০৯। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে জনগণের সেবার মান বাড়াও। ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট, গণতন্ত্রহীনতা ও মাস্তানতন্ত্র রুখে দাঁড়াও। জরাজীর্ণ রাস্তাঘাটের বেহাল দশা দূর কর।
১০। দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিক-কর্মচারীদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আজীবন আয় এর সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
১১। দোকান কর্মচারী, নৌ-যান, এম.ই.পি, অপসোনিন, রেফকো, কেমিস্ট, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, সু-ফ্যাক্টরী, পণ্য বিক্রয় ও সরবরাহকারী শ্রমিক, সিটি ফল হ্যান্ডলিং, আড়ৎঘর শ্রমিক সহ ব্যক্তি মালিকানাধীন শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়োগপত্র ও সার্ভিস বই দিতে হবে এবং শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ১২ ঘন্টা নয়, ৮ ঘন্টা শ্রম সময় কার্যকর কর।
১২। সাপ্তাহিক ছুটি সহ ঈদ, ধর্মীয় উৎসবসমূহ, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, ১লা মে শ্রমিক দিবস ও ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে ছুটি দিতে হবে।
১৩। সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, সা¤্রাজ্যবাদ রুখে দাঁড়াও।
১৪। ইমারত, বিড়ি, গুড়া মসলা, ব্যাংক-বীমা-ডায়াগনস্টিক, বেসরকারী হাসপাতাল, বস্তিবাসী সহ দিনমজুরদের সারা বছর কাজ দাও ও ন্যায্য মজুরী নিশ্চিত কর। হকার উচ্ছেদ বন্ধ কর।
১৫। ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও অটো চলাচলে পুলিশী বাধা অপসারণ কর। আউট সোর্সিং বাতিল, অভিবাসী শ্রমিক কর্মচারীদের নিরাপত্তা দাও। মৎস্য শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।