৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উজিরপুরের নগদ থেকে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাত, গ্রেপ্তার ২

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

উজিরপুর প্রতিনিধি:বরিশালের উজিরপুরে নগদ ডিলার ব্যবসায়ীর একাউন্ট হ্যাক করে ৩৭ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে ডিলার। উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ গৌরনদীর নগদের ডিষ্টিবিউটর ব্যবস্থাপকসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গতকাল দুই আসামিকে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও প্রতারিত ব্যবসায়ী জানান, উজিপুর উপজেলার ধামুরা বন্দররস্থ টেম্পু স্ট্যান্ডে নগদ এজেন্টের ১ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছে ধামুরা গ্রামের মোঃ রানা খান। রানা খানের মোবাইল একাউন্ট হ্যাক করে প্রতারক চক্র ৫টি মোবালের মাধ্যমে তার একাউন্টের ৩৬ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

ব্যবসায়ী রানা খান অভিযোগ করে বলেন, গত ১৯ ডিসেম্বর সকালে আমি গৌরনদীর নগদের ডিষ্টিবিউটর বিজনেস টু বিজনেস থেকে ৩৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ৩১৫ টাকা থেকে আমার একাউন্টে লোড দেয়। ওই দিন বিকালে ০১৬১০৪৫০৯৬০ নম্বর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার মুঠোফোনে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে বলে আমি ভুলে একটি ম্যাসেজ আপনাকে পাঠিয়েছি দয়া করে ম্যাসেজের পিন কোডটি আমাকে বলেন। আমি ওই লোককে আমার মুঠোফোনে আসা পিন কোডটি দিলে কিছু সময়ের মধ্যে আমার মুঠোফোনে থাকা সকল টাকা ক্যাশ আউট করে নিয়ে যায়। কিছু সময় পরে লেনদেনের সকল তথ্য আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে চলে আসে। রানা খান আরো জানান, ২২ ডিসেম্বর গৌরনদী নগদ একাউন্টের মূল ডিষ্টিবিউটর ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম খান ফোন করে ওই টাকার হিসাব চান এবং এম.এস ট্রেডার্সের প্রোপাইটর সান্টু ভূইয়ার গৌরনদীর আশোকাঠী তৈলের পাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকজন মিলে ঐ দিন বিকাল ৩ টা থেকে ২৩ ডিসেম্বর রাত ১০ টা পর্যন্ত রানাকে মারধর করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে তার পিতা মোঃ মানিক খান সহ ধামুরা বন্দরের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা পরদিন ওইখানে গিয়ে নগদ ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে বাকি টাকার ষ্ট্যাম্পে মুচলেখা দিয়ে ছাড়া পান । ঘটনার কিছুদিন পড়ে রানা খান বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে।

পরে মডেল থানার চৌকস পুলিশ অফিসার ওসি তদন্ত মাহবুবুল ইসলাম সহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা অভিযানে নামে এক পর্যায় ১০ জানুয়ারী ওই ফোনদাতা গৌরনদী উপজেলার সাওড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ জয়কে গ্রেফতার করে। জয়ের স্বীকারোক্তী অনুযায়ী এর সাথে জড়িত এম.এস ট্রেডার্সের নগদ ডিস্টিবিউটারের ম্যানেজার একই উপজেলার সাওড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামকেও গ্রেফতার করে। ১১ জানুয়ারী ২ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

গ্রেফতারের পরে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে গৌরনদীর নগদের ডিষ্টিবিউটর বিজনেস টু বিজনেস এর ম্যানেজার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নেই, তিনি নির্দোশ বলে জানান।

প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধীকারী মোঃ সান্টু ভুইয়া মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি রিসিভ করেননি।

উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, মুঠোফোন হ্যাক করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী রনি খান বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার গৌরনদীর শাওড়া থেকে গৌরনদীর নগদের ডিষ্টিবিউটর বিজনেস টু বিজনেস ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম খান ও তার সহকারী ফয়সাল আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল দুই আসামিকে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে । মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (এসআই) সুদীব কুমার জানান, দুই অসামির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

সর্বশেষ