২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কাঠালিয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে গ্রাম প্লাবিত, আতংকে এলাকাবাসী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা-বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঠালিয়ার ভেরী ভেঙ্গে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে। জেলার নিম্মাঞ্চলে ইতিমধ্যে পানি ডুকেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে (২৫ মে) উপজলা পরিষদ ও কাঠালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বিষখালী তীরের বাঁধের একটা অংশ ভেঙ্গে পানি ঢুকে বাড়ির আঙ্গিনাসহ তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। এতে আতংকে রয়েছেন বাঁধ ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে কাঠালিয়া সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বড় কাঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়া, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি, নতুন কলাবাগান, পৌরসভা খোয়াঘাট এলাকা, রাজাপুরের বাদুরতলা লঞ্চঘাট, নাপিতের হাট, চল্লিশ কাহনিয়া এলাকাসহ সুগন্ধা-বিষখালী নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪৫টির অধিক গ্রামে পানি ডুকেছে। এর মধ্যে অধিক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাস বাড়ারা সাথে সাথে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিষখালী নদী পাড়ের (বাঁধ ভাঙ্গন) বাসিন্দা আঃ রব খান জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ আসলে আমারা খুবই আতংক থাকি। বিশেষ করে রাতে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকি। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদীতে চলে যায়। আজ দুপুরে হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যেভাবে পানি উঠতেছে এতে খুবই বিপদে আছি।

কলেজ শিক্ষার্থী মোঃ জহিুল লিমন জানায়, বহু বছর ধরে লঞ্চঘাট এলাকা ভেঙ্গে নদী বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর লঞ্চলঘাটের ৩শ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের উত্তর সাইডে কিছুই ফেলানো হয়নি। পানি স্রোতের চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙ্গছে। আজ বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরো বাড়বে। আমারা সবাই আতংকে আছি। তাই দ্রæত এ বাঁধটি মেরামত করা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।

কাঠালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান জানান, সকাল থেকে আমি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছে। কোথাও কোন সমস্যা নেই। তবে উপজেলা পরিষদের পিছনের বিষখালী তীরের বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গেছে। কিন্তু তেমন কোন ক্ষতির আশংকা নেই। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় উপজেলায় একটি কন্ট্রোল রুম, ৬টি মেডিক্যাল টিমসহ প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ৬৩টি কমিটির সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।

কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা পরিষদে জরুরী সভা আহবান করা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় যোশ/ইয়াস মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা পযায়ে ৪টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৫৯টি সাইক্লোন সেল্টার খুলে দেয়া ও ৪৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপ দেয়া হয়েছে। ৩৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা, তৃণমূল পর্যায়ে মাইকিং করা, স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জোহর আলীর সভাপতিত্বে ঝালকাঠি জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ভার্চুয়ালি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা-উপজেলা কর্মকর্তা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বেসরকারি সদস্যবৃন্দ ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নেন।

সর্বশেষ