জুলফিকার আমীন সোহেল :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে জাপা (এরশাদ) নেতা শফিকুল ইসলাম (৪০) কে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন ও হত্যা চেস্টা মামলা পুণরায় তদন্ত করছেন পিবিআই। পিবিআই ইন্সেপেক্টর আহসান কবির বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল‘২৪) বিকেলে মঠবাড়িয়া-তুষখালী সড়কের মাঝেলপুল ফরাজী বাড়ির সামনের প্রধান সড়ক ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকা পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহ করেন।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে একটি মামলার হাজিরা দিতে মটর সাইকেল যোগে মঠবাড়িয়া আদালতে যাবার পথে সাড়ে ৯ টার দিকে মাঝেলপুল ফরাজী বাড়ির সামনে পৌছলে শফিকুল ইসলামের গাড়ি চালক বাবু ও তাদের সাথে থাকা সুমন কৌশলে মটর সাইকেল থামান। মূহুর্তেই হামলা কারীরা একটি মাহিন্দ্র যোগে কাছে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে ভুড়ি বের করে ও পা বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায় ।স্থানীয়রা আহত শফিকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকের কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঢামেক কর্তৃপক্ষ আহত শফিকুলকে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা দিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শফিকুল ইসলাম তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও তুষখালী গ্রামের মো. আইয়ুব আলীর ছেলে।নৃশৃংস এ হামলার ঘটানায় শফিকুল ইসলামের মা মমতাজ বেগম বাদি হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই মোঃ নাছির হোসেন হাওলাদার ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ সগির হোসেন হাওলাদার ওরফে ছগির মেম্বর সহ ৯ জন নামীয় এবং অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে ২৯ সেপ্টেম্বর‘২২ রাতেই মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর-পরেই পুলিশ মামালার প্রধান আসামী তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন সময় বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। বর্তমানে আসামী জামিনে রয়েছেন।ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম বলেন, আহতাবস্থায় আমি তৎকালীন মঠবাড়িয়া থানার ওসি নূরুল ইসলাম বাদলসহ পরিচিত আসামীদের নাম বলেছিলাম। আমি বেঁচে যাব এটা আমিসহ কেউ ধরণা করেনি, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন, তবে আমি পঙ্গু। ওসি বাদল ঘটনার দু‘দিন আগে আমাকে হাত-পা কেঁেট দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। আমার মা মামলা করার সময় ওসিকে আসামী করার জন্য বলেন কিন্তু ওসি নিজে চালাকি করে সুবিধা মতো মামলাটি গ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন মামলার ২ নং আসামী ছগির মেম্বর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাকে বাদ দিয়ে পুলিশ অনেকটা তরিঘড়ি করে আদালতে গত ২৮ জুন‘২৩ তারিখ চার্জসীড দাখিল করেন। এ কারনে আমার মা গত ১১ অক্টোবর‘২৩ তারিখ মনগড়া এ চার্জসীডের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে সম্প্রতি পিবিআই কে পুণরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, তৎকালী ওসি নূরুল ইসলাম বাদল এর বিরুদ্ধে স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রী, আইজিপি ও পুলিশ সিকিউরিটি সেলে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যাহার বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তবে তৎকালী ওসি নূরুল ইসলাম বাদল বরাবরই দাবী করছেন এ ঘটনার সাথে তারা জড়িত নন।
পিরোজপুর জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিষ্টিগেশন (পিবিআই) ইন্সেপেক্টর আহসান কবির বলেন, আদালতের আদেশে কর্র্তৃপক্ষ আমাকে মামলাটি পুণরায় তদন্তের দায়িত্ব দেন। ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলেই মামলার ডকেট হাতে পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যাই। মামলাটি অত্যান্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে।