৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গলাচিপায় পাক-হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

তারিখঃ ৮ ডিসেম্বর ২০২২

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় পাক হানাদার শত্রু মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৮ই নভেম্বর ১৯৭১ পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়ে গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়ন শত্রু মুক্ত করে এবং সশস্ত্র পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। মূলত ১৮ নভেম্বর জেলার গলাচিপা উপজেলার পানপট্টিতে পান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন কে. এম নুরুল হুদা ও হাবিবুর রহমান শওকত। অন্যদিকে পাক-হানাদার বাহিনীর নেতৃত্ব দেন মেজর ইয়ামিন। একটানা ১২ ঘণ্টা সম্মুখ যুদ্ধের একপর্যায়ে মেজর ইয়ামিনের নেতৃত্বাধীন পাক-সেনারা পিছু হটে যায় এবং রাতের আঁধারে পানপট্টি থেকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে তাঁদের শক্তি সাহস বেড়ে যায় এবং ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালীকে মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক সেনারা পটুয়াখালী শহর থেকে পালিয়ে গেলে ৮ ডিসেম্বর ভোরে পটুয়াখালীর মুক্ত আকাশে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজের পতাকা এবং জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয় গোটা শহর। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পটুয়াখালী জেলায় মোট ২৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালী সদরে ১৮ জন, দুমকিতে ৮৬ জন, বাউফলে ৬১ জন, দশমিনায় ৬ জন, গলাচিপায় ১৩ জন, কলাপাড়ায় ৩৪ জন, মির্জাগঞ্জে ১৮ জন ও রাঙ্গাবালীতে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এই দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় নাগরিকবৃন্দ ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পানপট্টি ইউপি আ’লীগ সভাপতি জনাব কুদ্দুস মেলকার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানপট্টি রনাঙ্গনের বীর সাহসী সন্তান ও গলাচিপা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ’লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাওসার আহমেদ তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দিলীপ কুমার বণিক, সমির কৃষ্ণ পাল, গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, উপজেলা আ’লীগের সহ দপ্তর সম্পাদক সমীর দেবনাথ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল ইসলাম দুদা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কাওসার মিয়া, ফোরকান কবির, মাসুদ রানা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার ডাকে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশ মাতৃকার হৃদয়ের টানে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি এবং এই পানপট্টি ইউনিয়নে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ করে পানপট্টিকে শত্রু মুক্ত করেছি। এই যুদ্ধে শরৎ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে বরিশাল বিভাগের ১ম শ্রেণির ঠিকাদার বাবু নিরঞ্জন বিশ্বাসসহ যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, শওকত মাহামুদ ও খোকন হাওলাদার সহ যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধা পানপট্টি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বে মর্যাদা অর্জন করার জন্য তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানান এবং পানপট্টি শত্রু মুক্ত দিবস পালন করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ