মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা শফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা চেষ্টার মামলায় জেল হাজতে থাকা তুষখালীর সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হাওলাদারের জামিন না মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত। একই সাথে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ এর ৫ দিনের আবেদন করা রিমান্ড না মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) জেল হাজতে থাকা সগীর হাওলাদারের পক্ষে তার আইনজীবী জামিনের প্রার্থণা করেন। অপর দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার পুর্বের আবেদন করা রিমান্ড শুনানীর জন্য তাকে আদালতে হাজির করেন। মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামরুল আজাদ শুনানী শেষে রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলার তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা চেষ্টার মামলায় এজাহারভুক্ত ২ নং আসামী একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হাওলাদার। উচ্চ আদালতের জামিন এর মেয়াদ শেষ হলে সগীর গত ৪ ডিসেম্বর নি¤œ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থণা করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ মামলায় উপজেলার মধ্য তুষখালী গ্রামের মৃতঃ ক্বারী রুস্তুম আলীর ছেলে হাফিজ (২৮), একই গ্রামের হাফেজ খানের ছেলে মূল হামলাকারী ইয়াসিন (৪০) ও মূল পরিকল্পণাকারী তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ভাই তুষখালী বাজারের মুদি দোকানী নাসির হোসেন (৫৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে। তিরি আরও বলেন, মূল হামলাকারী ইয়াসিনকে ঢাকা লালবাগ থানাধীন বেড়িবাধ এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর বিজ্ঞ আদালতে হাজের করলে সে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে ও গুরুপ্তপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মামলাটি অত্যান্ত গুরুপ্ত সহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত ও পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য- গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বাসিন্দা মুসা শরীফের সাথে চলমান একটি মামলায় শফিকুল আদালতে হাজিরা দিতে সকালে মোটর সাইকেল যোগে তুষখালী থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝের পুলের সন্নিকটে ফরাজি বাড়ির সামনে কালভার্ট এর উপরে আসা মাত্রই একটি মহেন্দ্র গাড়ি শফিকুলের মটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয়। শফিকুল মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পিছনের দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা মাহেন্দ্র থেকে নেমে তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে। এ সময় এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে শফিকুলের পেটের ভুড়ি বেড়িয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাপলে প্রেরণ করেন। এ নৃশংস হামলার ঘটনায় আহত শফিকুলের মা মমতাজ বেগম বাদি হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর ৫ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।