৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্লাস্টিকের হাতে পরিবারের হাল ধরতে চান রহিম

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

প্লাস্টিকের হাতে পরিবারের হাল ধরতে চান আবদুর রহিম। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নহল চৌমুহনী গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে। তার পেশা ছিলো পত্রিকা বিলি।
তিনি বলেন, এখনো মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরে লাফিয়ে উঠি, এই বুঝি পত্রিকার গাড়িটা চলে গেল। কত দিন কাজে যাইনা কিন্তু ভোরে জেগে উঠার অভ্যাসটা রয়ে গেছে। সময় মত স্টেশন পৌঁছাতে না পারলে গাড়ি চলে যায়। একবার গাড়ি মিস হলে- পত্রিকা চলে যায় কসবার কুটি চৌমহনী। তাই কাকডাকা ভোর হতে পত্রিকার জন্য কুমিল্লার দেবিদ্বারের পান্নারপুল স্টেশন গিয়ে অপেক্ষায় বসে থাকতাম। পত্রিকা নামিয়ে সাইকেলের পেছনে বেঁধে এক হাতে সাইকেল চালাই, প্লাস্টিকে মোড়ানো অন্য হাতটি সাইকেলের উপর ফেলে রাখি। এই কায়দায় সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন ৪০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে পত্রিকা বিক্রি করতাম। মুরাদনগরের বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড, জাহাপুর জমিদার বাড়ি, আলীরচর কলেজ, বোরারচর ও কলাকান্দি বাজারে পত্রিকা বিক্রি করেছি ১৪ বছর। করোনা ভাইরাস আসার পর স্কুল, কলেজ, অফিস আদালত বন্ধ। তার পত্রিকা বিক্রিও বন্ধ হয়ে যায়। দুই মেয়ে, এক ছেলে আর বৃদ্ধ বাবা- মা নিয়ে রহিমের সংসার।

আবদুর রহিম বলেন, ১৫ বছর আগে টিন ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে গিয়ে হাত চলে যায়। পরে এসে পত্রিকা বিক্রি করি। আমার এজেন্ট পত্রিকার ব্যবসা ছেড়ে দিলে বেকার হয়ে পড়ি। তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ মাছ, গোস্ত কবে কিনেছি তা মনে নেই। যখন ছেলে মেয়েরা ভাত দিলে মাছের জন্য কান্না করে তখন আর সহ্য হয় না। বড় মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় থ্রিতে পড়ে, ছেলেটা ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণিতে। ছোট মেয়েটার বয়স দুই বছর। ১০ মাসের মধ্যে একদিনও একপোয়া দুধ কিনে দিতে পারেনি। শুনেছি সরকার পঙ্গু প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য কত কিছু করে। আমাকে যদি বাঁচার মত কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিত। তাহলে ছেলে মেয়েগুলো নিয়ে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারতাম।

সর্বশেষ