২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরগুনায় বেড়েই চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরগুনা প্রতিনিধি :: হঠাৎ করেই বরগুনায় শুরু হয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত শতাধিক রোগী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিছানাপত্র না থাকায় অনেক রোগী ঠাঁই নিয়েছেন মেঝেতে। চিকিৎসক সংকটে রোগীদের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ৪৩ জন। এর মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।

জেনারেল হাসপাতালে সূত্র আরও জানায়, মার্চের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫-৩০ জনের মতো রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়। গত তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গড়ে ১০০ জনে পৌছায় এবং সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় তা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ১২৪ জন ভর্তি রয়েছেন। এ পর্যন্ত ২০৭৪ জন রোগী ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে মাত্র আটটি বেড রয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড না থাকায় রোগীরা হাসপাতালে মেঝেতে বিছানা পেতেছেন।

সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, জানুয়ারি থেকে আজকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ৫৯৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ২ হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত বেসরকারি হিসাবে মৃত ৪। এরমধ্যে বেতাগীতেই মারা গেছে ৩ জন।

মঙ্গলবার সকালে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচতলার মেঝেতে অনেকেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। মেঝের নোংরা ও অপরিচ্ছিন্ন পরিবেশে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয়েছে তাদের। এতে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

চিকিৎসাধীন কয়েকজন রোগী জানান, বেড না থাকায় মেঝের নোংরা পরিবেশে তাদের অবস্থান নিতে হয়েছে।

সাজু নামের এক রোগী জানান, তিনি গতরাতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু এখনও কোনো চিকিৎসক আসেননি। শুধু সেবিকারা এসে রাতে স্যালাইন দিয়েছেন।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (আবাসিক) সোহরাব উদ্দীন বলেন, এমনিতেই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও বিছানা নেই। এ অবস্থায় হঠাৎ বিপুল সংখ্যক রোগী ভর্তি হওয়ায় আমরা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে দুই একদিনেই প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্যের সংকট দেখা দেবে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জানান, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা অতটা স্বাস্থ্য সচেতন নয়। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার কারণে রোগ-জীবাণুর আক্রমণের শিকার হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ