২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরগুনায় ৯ মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ওঠানো হলো স্কুলশিক্ষকের মরদেহ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরগুনা প্রতিনিধি :: হত্যার ৯ মাস পর আদালতের নির্দেশে স্কুলশিক্ষক নাসির হাওলাদারের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বরইতলা এলাকা থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

হত্যার ৯ মাস পর মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে নাসির হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ। নিহত নাসির বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া এলাকার গয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি গালবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, মামলাটির তদন্তের স্বার্থে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইয়াসিন আরাফাত স্কুল শিক্ষক নাসিরের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। সেই আদেশ অনুযায়ী বুধবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার জয়রাজ হোসেন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্বরজিত কুমারের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। মরদেহের অবশিষ্ট অংশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য মহাখালীর ল্যাবে পাঠানো হবে।

বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম খান মিলন বলেন, গত বছরের ২৩ মে রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির হাওলাদার নিজ বাড়িতে মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিশেবে উল্লেখ করা হয়েছিল স্ট্রোক। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তার মরদেহ দাফন করেন স্বজনরা। এ ঘটনার ৯ মাস পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ফোনে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়। ওই রেকর্ড পুলিশের কাছে পৌঁছানোর পর বুধবার রাতেই নাসিরের ভাই আবদুল জলিল বরগুনা সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এরপর পুলিশ নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) এবং মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়াকে (২০) আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী মিতু ও তার সহযোগী রাজু শিক্ষক নাসিরকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

গ্রেফতার ফাতেমা মিতু বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা এলাকার মো. মাহতাব মৃধার মেয়ে। তিনি বরগুনার থানাপাড়া এলাকায় বাবার ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজু মিয়া ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানা পুলিশের ওসি (অপারেশন) স্বরজিত কুমার বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাছে মরদেহ ময়নাতদন্তের আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের বিচারক ইয়াসিন আরাফাত মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। মরদেহ উত্তোলনের পর প্রাথমিকভাবে মাথায় খুলিতে কালো দাগ ও নাকের সামনের অংশ ভাঙা শনাক্ত হয়েছে বলেও এই তদন্ত কর্মকর্তা দাবি করেন।

তিনি জানান, মরদেহের ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট পেলে শিগগিরই তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

সর্বশেষ