৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বরিশালে বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: কারো মুখে মাস্ক আছে তো, কারো মুখে নেই, সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, গায়ে গা ঘেঁষে মানুষ কেনাকাটা করছে। অবস্থাদৃষ্টে তার মনে হয়েছে যেন ঈদের আগে চাঁদরাত। এছাড়াও সরকার ঘোষিত সাত দিনের ‘কঠোর বিধিনিষেধ’-এর আজ যে ষষ্ঠ দিন চলছে তা দেখে ঘুণাক্ষরে বোঝার উপায় নেই। এই লকডাউনে বরিশালে বিপণী বিতান খোলা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশাল নগরের বিপণী বিতানগুলোতে সকাল থেকেই আনাগোনা শুরু হয়েছে ক্রেতাদের। তবে বেশি ভিড় দেখা গেছে শিশুদের পোশাকের দোকানগুলোতে। এসব দোকানের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে অনীহা রয়েছে। বিশেষ করে ধোয়ার ব্যবস্থা নেই বেশিরভাগ দোকানে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করে মাস্ক ব্যবহার করছেন। এদিকে মাস্ক নেই কেন ক্রেতা-বিক্রেতাদের জিজ্ঞাসা করলেই তারা দাবি করেন প্যান্ট নয়তো শার্টের পকেটে আছে। আবার কেউ কেউ মাস্ক পরতে ভুলে গেছেন এমন অযুহাত দিচ্ছেন।

যদিও বরিশালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে, তবে তাতেও লক্ষ্য করা গেছে মানুষ নিয়ম মেনে মাস্ক পরছেন না। আবার অনেকেই মাস্ক না পরার দায়ে জরিমানা গুণছেন। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরের বিভিন্ন স্থানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বললেও বিপণী বিতানের স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরের ব্যাপারে কোনো কর্তৃপক্ষের নজরদারির বিষয়টিও সকালে চোখে পড়েনি। এছাড়া নগরীতে ব্যবসায়ীরা যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন সেই চকবাজারেই অনেক দোকানী ও তাদের কর্মচারীদের মাস্ক পরতে দেখা যায়নি।

এদিকে বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে বরিশালে করোনা পরিস্থিতি দিনে দিনে বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে বরিশাল বিভাগে সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার বেশি। এ অবস্থায় শুধু করোনার টিকা গ্রহণ করলেই চলবে না, স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর বলছে, গত ১৩ মাসে বরিশাল বিভাগে মোট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৬৪ জন। এরমধ্যে রয়েছেন সর্বোচ্চ বরিশালে ৫ হাজার ৬৩০ জন, পটুয়াখালীতে এক হাজার ৯০৫ জন, পিরোজপুরে এক হাজার ৩৬৬ জন, ভোলা এক হাজার ৩৩০ জন, বরগুনা এক হাজার ১২৬ জন ও ঝালকাঠিতে এক হাজার সাত জন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে ২১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে বিভাগটিতে মোট সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৭৮৮ জন।

এছাড়া বিভাগটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন বরিশাল জেলায়। এ বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২২৩ জনের। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় সর্বোচ্চ ৯৫ জন, পটুয়াখালীতে ৪৬ জন, পিরোজপুরে ২৭ জন, বরগুনায় ২২ জন, ঝালকাঠিতে ২০ জন এবং ভোলায় ১৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিভাগে ২০২০ সালের ৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জ ফেরত পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার এক শ্রমিকের করোনা শনাক্ত হয়।

সর্বশেষ