২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে স্ট্যান্ড রিলিজ কর্মকর্তার হাতে জিম্মি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শাস্তির দাবীতে  মানববন্ধন 

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণীঃ
বরিশালের বানরীপাড়া স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিধ আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জুনিয়র মেকানিক মো. দেলোয়ার হোসেনকে লাঞ্ছিত এবং হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেন।
মানববন্ধনকারীরা অবৈধভাবে সরকারী বাসা দখলকারী, মাদকসেবী পরিসংখ্যানবিধ আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র মেকানিক মো. দেলোয়ার হোসেনকে লাঞ্ছিতকারীর কঠোর বিচার দাবী করেন।
গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা বলেন, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের সাবেক পরিসংখ্যানবিধ আব্দুল্লাহ আল মামুন গত রোববার তার অবৈধভাবে দখলে রাখা সরকারী হাসপাতালের কোয়াটারের বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করার জন্য হুমকি ধামকির একপর্যায়ে জুনিয়র মেকানিক মো. দেলোয়ার হোসেনকে লাঞ্ছিত করেন।
ওই ঘটনায় মামুনের বিরুদ্ধে ঘটনার দিন রাতে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন দেলোয়ার হোসেন।
অভিযোগকারী জুনিয়র মেকানিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার দিন আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে আমার স্ত্রী সন্তানের সামনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মারধরের চেষ্টা করেন। এক পর্যায় হুমকি-ধামকি দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা: রমিজ উদ্দীন বলেন, বহু অপকর্মের কারণে এই হাসপাতাল থেকে ৭ মাস আগে ষ্ট্যান রিলিজ করে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। তারপরও সে মেহেন্দিগঞ্জ হাসপাতালের কোয়ার্টার দখল করে আছে।
তাকে বাসা ছাড়ার জন্য দুইমাস সময় দিয়েছি, কিন্তু ৭মাস হয়ে গেছে সে বাসা ছাড়েনি, এছাড়াও থাকার জন্যও সে আবেদন করেনি এবং ৭ মাসের বাসা ভাড়াও পরিশোধ করেনি। সিভিল সার্জন তাকে নোটিশ করলেও তার জবাব দেননি। সিভিল সার্জনের নির্দেশে তার বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এর পর তিনি অবৈধভাবে সংযোগ দিয়ে বসবাস করছেন, এরই জের ধরে জুনিয়র মেকানিক দেলোয়ার হোসেনকে লাঞ্চিত করেন তিনি।
জানা যায়, অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদক সেবন, অফিসের টাকা আত্মসাৎ, ঘুষ-দুর্নীতি, সরকারি গাছ আতœসাৎ, হাসপাতালের এক ষ্টাফকে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ মাথায় নিয়ে বানারীপাড়ায় বদলি করা হয় পরিসংখ্যানবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে।
তার অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ইতোপূর্বে বরিশাল সিভিল সার্জন অসংখ্যবার কারণ দর্শানোর কৈফিয়ত তলবসহ বেতন বন্ধ করেছিললেন। কিন্তু তাতেও তার কোন আমুল পরিবর্তন আসেনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাশিয়ারকে অফিস চলাকালীন সময়ে প্রকাশ্য মারধর করেন তিনি।
এছাড়াও নিজে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে ব্যবসার অংশিদার হওয়ায় হাসপাতালের আল্ট্রা মেশিনসহ ল্যাবের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নষ্ট দেখানো হয়। তার অসাধচারনে অনেক ডাক্তার অন্যত্র বদলী হয়ে গেছেন। ঠিকাদারকে বাধ্য করে গত বছর হাসপাতাল সংস্কার কাজ নিজে নিয়ে নামেমাত্র করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিধ আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কাউকে মারধর করিনি বা হুমকিও দেইনি। আমার বিরুদ্ধে স্থানীয় একটি দালাল গ্রুপ ষড়যন্ত্র করছে।
বদলি হওয়ার পরও কেন অন্য হাসপাতালের কোয়ার্টার দখল করে রেখেছেন জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি উর্ধ্বত কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ওখানে বসবাস করছি।
বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন বলেন, পরিসংখ্যানবিধ আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অনেকদিন যাবত বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাকে বদলি করা হয়েছে।
মারধর ও হুমকির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ও আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

সর্বশেষ