২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশাল সিটি নির্বাচন : প্রার্থী হতে চান পদে না থাকা বিএনপি নেতারা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

অনলাইন ডেস্ক ::: বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে লড়তে চান না পদে থাকা বিএনপি নেতারা। তবে নির্বাচনে লড়তে চান পদে না থাকা নেতারা। তারা যেকোনভাবে প্রার্থী হওয়ার পথ খুঁজছেন। তবে পদধারী নেতাদের একটাই কথা, নির্বাচনে অংশ নেবেন না।

এদিকে, বিসিসি নির্বাচনে বিএনপি থেকে মেয়র পদে কোনও প্রার্থী থাকবে না বলে জানালেন দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন।

তিনি বলেন, ‘আকাশে-বাতাশে অনেক কথা ভেসে বেড়ায়, তা সত্য নয়। বিএনপি ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ সরকারের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নেবো না। এরপরও যদি কেউ নির্বাচনে অংশ নেয়, তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি দলের কেউ নন।’

তবে বরিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের সা‌বেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আহসান হা‌বিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপন মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রুপন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য। বর্তমানে বিএনপির কোনও পদে নেই। রুপন দাবি করেছেন তিনি দল থেকে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চান মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে এই কথা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন এবায়দুল হক।

তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত হলো মেয়র ও কাউন্সিলর পদে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। দলের সিদ্ধান্ত মেনে আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আমাদের যে আন্দোলন চলছে, তা বাস্তবায়ন হওয়ার পরই নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে দল। কাজেই আমি প্রার্থী হচ্ছি না। আমাদের এই ত্যাগ জনগণের জন্যই।’

দলীয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব থেকে শুরু করে ছয় জন যুগ্ম আহ্বায়ক একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির প্রথম থেকে চতুর্থ পরিষদ পর্যন্ত ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনবার কাউন্সিলর ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ মাহমুদ সিকদার, ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনবার কেএম শহিদুল্লাহ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দুবার জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একবার হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দুবার যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন পৌরসভা থাকাকালীন একবার কমিশনার নির্বাচিত হন।

তাদের মধ্যে হাবিবুর রহমান টিপু ও হারুন অর রশিদ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া মহানগর বিএনপির ৩১ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নেতাকর্মী জানিয়েছেন।

মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে আমাদের; যা এখনও চলমান। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ রয়েছে, বিসিসি নির্বাচনে কেউ অংশ নিলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হলেও তাকে দলে ফেরানো হবে না। মেয়র কিংবা কাউন্সিলর উভয়ের ক্ষেত্রে এই কথা প্রযোজ্য। এ কারণে পদে থাকা কেউ নির্বাচনে অংশ নেবেন না। এরপরও কেউ অংশ নিলে তাকে দল থেকে বের হয়ে যেতে হবে।’

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব চারবারের কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবির বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কঠোর নির্দেশ, এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ কারণে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে বিএনপি থেকে কেউ অংশ নেবে না। আমাদের ১০ দফা আন্দোলন চলমান। সেই আন্দোলনের প্রথম দাবি হলো, বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। তা যতদিন বাস্তবায়ন না হবে, ততদিন বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না।’

দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন বলেন, ‘মেয়র ও কাউন্সিলর আলাদা করে দেখার কিছু নেই। এই সরকারের অধীন দল কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না। কেউ অংশ নিলে তাকে দল থেকে ছিটকে পড়তে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, নির্বাচনে কেউ অংশ নিলে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ দলের নীতিনির্ধারকরাও কঠোর অবস্থানে আছেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে রুপনের অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিলকিস জাহান বলেন, ‘রুপন বিএনপির কেউ নন। তিনি সাবেক মেয়র এবং সাবেক বিএনপি নেতার ছেলে। নির্বাচনে তার অংশ নেওয়া ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।’

সর্বশেষ