৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মুলাদিতে বসতবাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও টেঁটাবিদ্ধ করে জখম ১১

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি :: জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নারী ও মাটিকাটা শ্রমিকসহ ১১ জনকে কুপিয়ে জখম এবং টেঁটাবিদ্ধ করেছে প্রতিপক্ষরা। এসময় বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই হামলায় গুরুতর আহতাবস্থায় ৭ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশালের মুলাদী উপজেলার চর কমিশনার গ্রামে গতকাল এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মুলাদী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হামলার পরে পুলিশের পাশাপাশি বরিশাল র‌্যাব-৮’এর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মুলাদী উপজেলার চর কমিশনার মৌজার ৩৫৭ নং খতিয়ানের ২৪১৫ দাগে ৮৪ শতাংশ জমি নিয়ে কৃষক শাহজাহান বেপারীর সঙ্গে একই গ্রামের ফোরকান ফকির গংয়ের পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল। শাহজাহান বেপারীর দখলে থাকা ওই সম্পত্তিতে বুধবার সকালে তিনি বালু ভরাটের জন্য মাটি কাটতে গেলে তাতে বাঁধা দেয় প্রতিপক্ষরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুজ্জামান জানান, শাহজাহান বেপারী তার লেবার নিয়ে মাটি কাটা শুরু করলে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চর কমিশনার গ্রামের ফোরকান ফকির, তোতা সরদার ও শামীম খানের নেতৃত্বে রামদা, টেঁটা, বল্লম, লেজাসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ৩০-৩৫ জন লোক শাহজাহান বেপারীর বসতবাড়িতে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা টিনের বেড়া কুপিয়ে ওই বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর এবং লুটপাট চালায়। তাদের রামদা ও বল্লমের কোপে এবং টেঁটাবিদ্ধ হয়ে এসময় মাটিকাটা ৪ শ্রমিকসহ বাড়ির ১১ জন আহত হন।

আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় নিলুফা বেগম (৪০), শাহজাহান বেপারী (৫৫) ও সোহাগ মল্লিককে (৩০) মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এবং মাটিকাটা লেবার আরিফ (২৫), লিটন (৩০), সজীব (২৬) ও রিয়াজকে (২২) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও আহত মাইদুল বেপারী, স্বপন বেপারী, সাইফুল সরদার এবং সবুজ বেপারীকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মুলাদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন শাহজাহান বেপারী বলেন, ‘হত্যা করে জমি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আমার ৪ লেবারসহ বাড়ির মোট ১১ জনকে কুপিয়ে এবং টেঁটাবিদ্ধ করেছে প্রতিপক্ষরা। একই সময়ে তারা আমার বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ, মোবাইল ও লেবারদের বেতনের টাকা লুটপাট করে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। প্রতিপক্ষের মূল হোতা ফোরকান ফকিরের শ্যালক জামাল ও কামালসহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে ৫-৬টি মামলা রয়েছে।

মামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ উদ্দিন মৃধা জানান, হামলার খবর পেয়ে সাথেসাথে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে মামলা রেকর্ড করাসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার পরে র‌্যাবের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) শাহরিয়ারের নেতৃত্বে বরিশাল র‌্যাব-৮’র একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি র‌্যাব।

এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ফোরকান ফকির বলেন, ‘আমাদের জমিতে তারা বালু ভরাটের জন্য মাটি কাটছিল বিধায় বাঁধা দেওয়া হয়েছে। তাই সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ কয়েকজন একটু আহত হয়েছে। আমরা কারো বসতবাড়িতে ভাংচুর কিংবা লুটপাট করিনি।’ তবে বিরোধীয় সম্পত্তিতে আপনাদের বৈধতা থাকলে পুলিশকে না ডেকে নিজেরাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঁধা দিতে গেলেন কেন-এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সর্বশেষ