২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শ্রমিক কর্মচারীদের ১৫ দফা দাবী আদায়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার হলের সামনে শ্রমিক কর্মচারীদের ১৫ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বরিশাল এবং শহরস্থ অন্যান্য বেসিক সংগঠনের যৌথ উদ্যেগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শ্রমিক নেতা স্বপন দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা এ্যাড. এ কে আজাদ, বরিশাল জেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা এ্যাড. হিরণ কুমার দাস মিঠু, কবি অপূর্ব গৌতম, নৌযান নেতা শেখ আবুল হাসেম, বস্তিবাসী নেতা মোঃ নূর হোসেন, দর্জি শ্রমিক নেতা তুষার সেন, বিদ্যুৎ শ্রমিক নেতা জে কে মুকুল, রিক্সা শ্রমিক নেতা আখতার রহমান স্বপ্রু, দর্জি শ্রমিক নেতা মোঃ আল-আমিন, দোকান কর্মচারী নেতা আবুল বাশার আকন, মোঃ রুহুল আমিন, ইমারত শ্রমিক নেতা মোঃ আশরাফ হোসেন। সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করে বরিশাল জেলা ইমারত নির্মাণ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা।
বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি দেশে দেশে মৃত্যু আতংক হলেও সা¤্রাজ্যবাদী মহা শক্তিধর দেশসমূহ তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে ক্ষুদ্র রাষ্টসমূহকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সাম্প্রদায়িক উম্মাদনা সৃষ্টি এবং যুদ্ধ বিগ্রহ অব্যাহত রাখার কারণে দেশে দেশে অসংখ্য মানুষ বসতভিটা ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন। অপরদিকে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মচারীরা চাকুরীচ্যুত হয়েছেন। হয়রানী ও নির্যাতনের শিকার সহ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যতায় কবলিত হয়েছেন। আমাদের দেশেই বেকার হয়েছেন আড়াই কোটি শ্রমিক কর্মচারী। অথচ দেশে এই করোনাকালীন সময় কোটিপতি হয়েছে ১১ হাজার ৬ শত জন। স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম দুর্নীতি সর্বোচ্চ স্থান দখল করেছে। অথচ শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন বকেয়া। বক্তারা শ্রমিক ছাঁটাই, হয়রানী ও নির্যাতন বন্ধ এবং শ্রমিক কর্মচারীদের জরুরী ১৫ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে সকল শ্রমিক কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধভাবে লাগাতার আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।

১৫ দফা দাবী নি¤œরূপ :
০১। কলকারখানা, দোকান, শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের কাজে যোগদানের দিন থেকে নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক, সাপ্তাহিক ছুটিসহ আইনানুগ ছুটি দিতে হবে।
০২। করোনাকালীন সময় ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক পরিবারকে আর্থি সহায়তা প্রদান।
০৩। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিক কর্মচারীদের করোনার টিকা প্রদান।
০৪। শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন মজুরী অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
০৫। করোনাকালীন সময় শ্রমিক কর্মচারীদের বাসা ভাড়া মওকুফ করতে হবে।
০৬। শ্রমিক কর্মচারীদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া ছেলে মেয়েদের বেতন, সেশন ফি, ভর্তি ফি মওকুফ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য যানবাহনের ভাড়া অর্ধেক করতে হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পূর্বেই ছাত্র-ছাত্রীদের করোনার টিকা প্রদান এবং শিক্ষা উপকরণ বিনামূল্যে দিতে হবে।
০৭। শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যূনতম মজুরী ২০ হাজার টাকা এবং নিয়মিত রেশন দিতে হবে।
০৮। ইমারতসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়মিত কাজ দিতে হবে।
০৯। বিদেশ ফেরৎ শ্রমিকদের পুনর্বাসন করতে হবে এবং ইমারত নির্মাণ শ্রমিক সহ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের দক্ষ করে সরকারী খরচে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
১০। নতজানু পররাষ্ট্র নীতি বাতিলও বিদেশে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
১১। শ্রম দপ্তর সহ অফিস আদালতের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং করোনাকালীন সময় ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
১২। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল সহ চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ এবং চিকিৎসা ব্যয় দ্রুত কমাতে হবে।
১৩। শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন বন্ধ এবং বেকার শ্রমিকদের কাজ দিতে হবে।
১৪। রাষ্ট্রায়াত্ত্ব পাটকল সহ বন্ধ কল কারখানা চালু করতে হবে।
১৫। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে ষাটোর্ধ শ্রমিক কর্মচারীদের পেনশন দিতে হবে।

সর্বশেষ