২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হাত খরচের টাকায় রোবট তৈরীঃ দেশজুড়ে আলোচনায় বরিশালের সুজন

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলা রোবট তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কলেজ ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পাল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর বছরে রোবটটি করায় এর নাম দেওয়া হয়েছে “বঙ্গ”।

রোবটের স্বত্ত্বাধিকারী সুজন পাল বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের জয়দেব পালের ছেলে সরকারি গৌরনদী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ।

ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পাল বার্তা বাজারকে জানান, এ রোবটটি বাংলা ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারে। বাড়ি ও অফিস-আদালত কিংবা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগলে মুহুর্তেই খবর পৌঁছে দেবে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিসকে। এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে ঘরে থাকা লোকজনকে। আবার প্রয়োজনে রোবটটি কাজ করবে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে। প্রয়োজনে চিকিৎসক হিসেবে প্রাথমিক চিকিৎসাও দিতে পারবে রোবটটি। সেই সঙ্গে কৃষকের কৃষি কাজে, বিশেষ করে ফসলের রোগ বালাই মোকাবেলায় পরামর্শ দেবে এ রোবট। তিনি আরও জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমি এ রোবটটিকে আরও আধুনিকভাবে তৈরি করে দেশের মানুষের সেবায় কাজে লাগাতে পারবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে অনেকটাই দারিদ্রতাকে জয় করে মেধা দিয়ে বাংলা ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলা এ রোবট তৈরির পেছনে ছিল সুজনের পরিবার, শিক্ষক ও সহপাঠীদের একনিষ্ঠ উৎসাহ, মনোবল আর ভালোবাসা। আর এসব কিছুকেই অনুপ্রেরণার অংশ হিসেবে কাজে লাগিয়েছে সুজন।

উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুজন পালের কাকা গৌতম পাল জানান, অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে দেওয়া হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে এবং নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা উপার্জন করে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে চার মাস চেষ্টার পর রোবটটি প্রস্তুত করে। আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর সময়ে তৈরি করা এ রোবটটি বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম করণ করা হয় “বঙ্গ’’। সুজনের আবিষ্কৃত রোবট বঙ্গ’র মাধ্যমে অগ্নিনির্বাপণ, আগুন থেকে মানুষকে বাঁচানো এবং অগ্নিকান্ডের স্থানে দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও ভূমিকা রাখবে প্রাথমিক শিক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও কৃষি ও ফসলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে। তাকে যে কোনো প্রশ্ন করলে গুগল থেকে সার্চ করে উত্তর দেবে। রোবটটি দেখতে ও তার সঙ্গে কথা বলতে প্রতিদিনই ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজনের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মানুষ। ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পালের বাবা জয়দেব পাল ও মা সবিতা রানী পাল প্রথমে সুজনকে নিরুৎসাহিত করলেও এখন ছেলের মানুষের মতো কথা বলা রোবট তৈরি করায় খুশি তারা।

এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম বলেন, সুজনের আবিস্কৃত রোবটিকে আরও আধুনিকভাবে তৈরি করার লক্ষ্যে সে যদি লিখিতভাবে অর্থনৈতিক সাহায্যের আবেদন করে তাহলে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে থেকে সে যাতে পৃষ্ঠপোষকতা পায় আমি তার জন্য সুপারিশ করবো।

সর্বশেষ