২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইয়াসের প্রভাবে উজিরপুর সড়ক ভেঙ্গে ৪ ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নাজমুল হক মুন্না :: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট উচ্চ জোয়ারে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সন্ধ্যা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বুধবার সন্ধ্যায় উজিরপুর উপজেলার উজিরপুর-সাতলা ভেড়ী বাঁধ সড়ক ভেঙে গেছে। সড়ক ভেঙে পানি প্রবেশ করে উজিরপুর উপজেলার সাতলা ও হারতা ইউনিয়নে পানি প্রবেশ ১০টি গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থসহ ভোগান্তিতে পড়েছে। বরিশাল জেলা ও উপজেলা সদরে সঙ্গে সাতলা, হারতা, বরাকোঠা ও ওটরা ইউনিয়নের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

স্থানীয় লোকজন, ক্ষতিগ্রস্থ চাষী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার পৌর সদর, সাতলা, বরাকোঠা, ওটরা ও হারতা ইউনিয়ন রক্ষার জন্য স্বাধীনতাত্তর সময়ে উজিরপুর-সাতলা ভেরী বাঁধ নির্মান করা হয়। পরবর্তিতে ওই বাঁধটিতে বরিশাল এলজিইডি উজিরপুর সদর ডাক বাংলা থেকে সাতলা পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মান করেন। ওই সড়ক দিয়ে সাতলা ও হারতা ইউনিয়নের লোকজন বরিশাল জেলা ও উপজেলা সদরে সঙ্গে যাতায়াত করে থাকে। গত কয়েক বছরে সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন কবলিত হয়ে সড়কটির একাধিক স্থান নদীতে বিলীন হয়ে যায। পরবর্তি বরিশাল এলজিইটি নতুন করে প্রকল্প গ্রহন করে উত্তরে স্থান্তরিত করে পুনঃ সড়ক নির্মান করে। ওই সড়ক দিয়ে বরিশাল-সাতলা সব ধরনের বাস চলাচল করে থাকে।

এলাকাবাসি জানান, ঘূর্নি ঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত কয়েক দিনে সন্ধ্যা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত বুধবার দুপুরে বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। পানির চাপে সড়ক উপচে সাতলা, বরাকোঠা, ওটরা ও হারতার বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করে। বুধবার সন্ধ্যার দিকে পানির প্রবল চাপে উজিরপুর সাতলা সড়কের বরাকোঠা ইউনিয়নের চথল বাড়ি ও ডাবেরকুলের মধ্যবর্তী মৃধা বাড়ির সামনের পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এতে উজিরপুর পৌর এলাকা বারপাইকা, সাকড়াল, পরমনন্দশাহ গ্রাম, বরাকোঠা ইউনিয়নের নারিকেলী গ্রাম, সাকরাল, উত্তর সাকরাল, গাববাড়ি সাতলা ইউনিয়নের সাতলা, উত্তর সাতলা ও ওটরা, দক্ষিন ওটরাসহ প্রায় ২০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে ফসল , মৎস্য চাষীদের ব্যপত ক্ষতি হয়। জেলা ও উপজেলা সদরে সঙ্গে সাতলা, বরাকোঠা, ওটরা ও হারতা ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানি বন্দী হয়ে হয়ে পরে ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, উজিরপুর-–সাতলা সড়কটির সাকরাল, নারিকেল বাড়ি, চতলবাড়িসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি উপচে পরে সড়ক ডুবে গেছে। উজিরপুর সাতলা সড়কের বরাকোঠা ইউনিয়নের চথল বাড়ি ও ডাবেরকুলের মধ্যবর্তী মৃধা বাড়ির সামনের পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ডাবেরকুল গ্রামের সাইফুল ইসলাম (২৮), রফিকুল ইসলাম (৩০), আদম আলী (৫০) বলেন, বরিশালের উজিরপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে এই বরাকোঠা ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের বুক চিরে উজিরপুর -সাতলা সড়ক। বরিশাল এলজিইডি সম্প্রতি সময়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পুনঃ নির্মান কাজ সম্পন্ন করেছিল। ঘূর্নিঝড় ইয়াস প্রভাবে সড়কটি ভেঙ্গে গিয়ে ৪ ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানালেও এখনে সড়ক পুনঃ স্থাপনে কোন পদেক্ষপ গ্রহন করেন নাই। সাতলা গ্রামের জমির আলী (৫৫), সাকড়াল গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০), ওটরা গ্রামের আমির হোসেন (৪৮) হারতা গ্রামের আঃ জব্বার বলেন, উজিরপুর-সাতলা পাঁকা সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যা থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে। তারা জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার করে যোগাযোগ স্থাপনের দাবি জানান।

বরাকোঠা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সহিদুল ইসলাম মৃধা এ প্রসঙ্গে বলেন, সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর পরই এলাকাবাসি বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করে কিন্তু পানির চাপ বেশী থাকায় তা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়। উজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মীর মাহিদুল ইসলামের কাছে প্র সঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক বিচ্ছিন্ন হওায়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা লোকবল দিয়ে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল স্থাপন করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছি। পানির চাপ থাকার সংস্কার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তারপরেও জোরেশোরে কাজ চলছে আজকের মধ্যে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা

সর্বশেষ