২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা গলাচিপায় পঞ্চবটি আশ্রমে ৭দিন ব্যাপি মহানাম যজ্ঞ অনুষ্ঠিত তৃষ্ণার্ত মানুষদের বিশুদ্ধ পানি খাওয়ালো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বাবুগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবককে মারধর ।। পাথরঘাটায় মৎস্য বিভাগের অভিযানে ‘মারধর’, নদীতে ঝাঁপ দিয়ে এক জেলে নিখোঁজ এফডিসিতে সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে পিরোজপুরে মানববন্ধন রাঙাবালী তে সালাতুল ইসতিস্কার নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পিরোজপুরে ভোটে অংশ নেওয়ায় দল থেকে বিএনপি নেতা বহিষ্কার অন্যায়ের সাথে নয়া দিগন্তের সাংবাদিকরা কখনোই আপোষ করেন না বরগুনায় বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী, জায়গা নেই হাসপাতালের মেঝেতেও

তালতলীতে রয়েছে নাম মাত্র ২০ শয্যা হাসপাতাল !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বরগুনার তালতলী উপজেলা নামেই মাত্র রয়েছে ২০ শয্যা উপজেলা হাসপাতাল। করোনা মুহুর্তেও উপজেলার আড়াই লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কোন ভূমিকাই রাখতে পারছেনা হাসপাতালটি। প্রয়োজনীয় জনবল ও ঔষধপত্র সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালটির ইনডোর ও আউটডোর চালু করা যাচ্ছেনা বিধায় রোগী ভর্তির ব্যবস্থা করাও সম্ভব হচ্ছে না। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বরাদ্ধ ঔষধপত্র দিয়ে তালতলী ২০ শয্যা হাসপাতালটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা।

জানাগেছে, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক বরগুনা-৩ (আমতলী-তালতলী) আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। সে সময় তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারী আমতলী উপজেলার দক্ষিনের ৩টি ইউনিয়ন (বড়বগী, পঁচাকোড়ালিয়া ও কড়াইবাড়িয়া) ইউনিয়নকে ভেঙ্গে ৭টি ইউনিয়ন সৃষ্টি করে তালতলীকে উপজেলায় রূপান্তর করেন। তালতলী উপজেলা সৃষ্টি হওয়ার সাড়ে ৮ বছর অতিবাহিত হলেও এ উপজেলার প্রায় আড়াইলক্ষ মানুষের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তালতলী উপজেলায় রূপান্তর হওয়ার পর প্রশাসনিক প্রায় সকল অফিসের কার্যক্রম ভালভাবে চললেও শুধুমাত্র ২০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালটির কার্যক্রম নাম মাত্র রয়ে গেছে। এ হাসপাতালটি এখনো আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় তালতলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে।

হাসপাতালটি শুক্রবার ব্যতীত অন্যান্য দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকী সময় হাসপাতালের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। বন্ধের সময় যদি কোন মুমুর্ষ, গুরুত্বর ও জখমী রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে সাথে সাথে তাদেরকে আমতলী অথবা পটুয়াখালী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে হাসপাতালের দোতালার দু’টি কক্ষে ভাঙ্গাচুরা ৫ থেকে ৬টি শয্যা থাকলেও রোগী ভর্তির কোন কার্যক্রম নেই। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যবদি ইনডোর চালু হয়নি। আউটডোর চালুর জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল ও ঔষধপত্র বরাদ্ধ না থাকায় তাও ব্যহত হচ্ছে। জরুরী রোগীদের উন্নত চিকিৎসায় প্রেরণের জন্য হাসপাতালে নেই কোন এ্যাম্বুলেন্স। বর্তমানে ডেপুটেশনে এ হাসপাতালে ৪ জন চিকিৎসক থাকলেও উপস্থিত থাকেন মাত্র ২জন।

করোনা কালীন বরগুনার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গত ৩১ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সিভিল সার্জনের কাছে জেলার সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা ও জরুরী রোগী বহনে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে কিনা তা জানতে চান। সে সময় সিভিল সার্জন তালতলী উপজেলা ২০ শয্যা হাসপাতালের জনবল সংকট, নানাবিধ সমস্যা ও এ্যাম্বুলেন্স না থাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে বলেননি। তখন এনিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠেছিল।

সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্বের নির্বাচনী আসন ও তার দেয়া উপজেলার প্রায় আড়াইলক্ষ ভূক্তভোগী মানুষের পক্ষে সোস্যাল মিডিয়ার তালতলী উপজেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ ও ঔষধপত্র সরবরাহ করে দ্রুত হাসপাতালটির ইনডোর ও আউটডোর চালু করে রোগী ভর্তির ব্যাবস্থা করার জন্য তালতলীবাসীরা জোর দাবী জানাচ্ছেন।

বড়বগী ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম লিটু জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপজেলা তালতলীতে ২০ শয্যা হাসপাতালটি নামেই মাত্র আছে। শয্যা থাকলেও রোগী ভর্তির নেই কোন কার্যক্রম। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যবদি পর্যাপ্ত জনবল ও ঔষধপত্র বরাদ্ধের অভাবে ইনডোর চালু হয়নি। জরুরী রোগী উন্নত চিকিৎসায় প্রেরণের জন্য হাসপাতালে নেই কোন এ্যাম্বুলেন্স। রয়েছে চিকিৎসক সংকট। আড়াই লক্ষ মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র ২জন চিকিৎসক।

যুবলীগ নেতা শাহজাহান টুকু বলেন, হাসপাতালটি পুর্নাঙ্গ চালুর দাবীতে আমরা তালতলীবাসী আজ (সোমবার) ডিজিটাল মানববন্ধন করবো। তালতলীবাসী ফেইসবুক লাইভে এসে যার যার অবস্থান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আমাদের হাসপাতালটির সমস্যার কথা তুলে ধরে দ্রুত সমাধান করে হাসপাতালটি পূর্নাঙ্গভাবে চালুর যৌক্তিক দাবীগুলো তুলে ধরবো।

তালতলী উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক মোঃ ফাইজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, উপজেলার একটি হাসপাতাল হিসেবে যে ঔষধপত্র বরাদ্ধ পাওয়ার কথা তাও পাইনি। এখানে একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে সেই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্ধ দেয়া ঔষধ দিয়ে চালাচ্ছি হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম। এ হাসপাতালটিতে জনবলসহ স্বাস্থ্য সেবার রয়েছে নানাবিধ সমস্যা।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ২০ শয্যা বিশিষ্ট তালতলী উপজেলা হাসপাতালটি এখনো আমাদের হাসপাতালের আওতায় তালতলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতালটি শুক্রবার ব্যতীত অন্যান্য দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত খোলা থাকার পরে যে বাকী সময় বন্ধ থাকে এ বিষয়টি আমার জানা নেই।

উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবী উল কবির জোমাদ্দার বলেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এমপি মহোদ্বয়কে সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আড়াই লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য ২০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ ও ঔষধপত্র সরবরাহ করে দ্রুত হাসপাতালটিতে ইনডোর ও আউটডোর চালু করে রোগী ভর্তির ব্যাবস্থা করার জন্য আবেদন জানাবো।

সর্বশেষ