১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নেছারাবাদে ৩ বছরেও শুরু হয়নি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুর প্রতিনিধি ::: ঠিকাদারের গাফিলতিতে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ভরতকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে তিন বছরেও শুরু হয়নি ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ের একতলা নতুন ভবনের নির্মাণকাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেসমেন্টের একটি মাত্র টেস্ট পিলার গেঁথে কিছু নির্মাণসামগ্রী ফেলে রেখে আর কাজ করেনি। পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর জানিয়েছে, একাধিকবার চিঠি দিয়ে কাজের তাগিদ দিলেও আমলে নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিরন এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদার রফিক গাজী এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ও অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের নামে নতুন ভবন বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও কাজ শুরু না হওয়ায় পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিনে জানা গেছে, ১৯৫৬ সালে নির্মিত গুয়ারেখা ভরতকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে একতলা একটি টিনশেড দালান ও দুটি কাঠের ঘরের মধ্যে চলে সব কার্যক্রম। ওই তিন ঘরের মধ্য একটি ঘরে ছাত্রীদের আবাসিক থাকার জায়গা ও ওয়াশরুম। একটি ঘরে প্রশাসনিক ভবনের আসবাবপত্র, বাকি একটি কাঠের ঘরে চলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বর্তমানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে ওই বিদ্যালয়ে।

বিদ্যালয়ের গণিতের সহকারী শিক্ষক পলাশ কুমার মৈত্র বলেন, এখানে দিনে দিনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। একটি পুরোনো টিনশেড ঘরে বসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। চার বছর আগে একটি ভবন বরাদ্দ পেলেও তার কাজ এখনো শুরু হয়নি। এখানে বর্ষার সময় ক্লাসে বৃষ্টির পানি পড়ে কর্দমাক্ত হয়ে যায় মেঝে। এ ছাড়া বর্ষায় সাপ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। শ্রেণিকক্ষের সংকটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বসতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম শেখ বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সত্তর বছরে কোনো সরকারি ভবন হয়নি। এখানে ছাত্রীদের থাকার জায়গাও রয়েছে। সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের চেষ্টায় বিদ্যালয়ে চারতলা ফাউন্ডেশনের একটি একতলা ভবন বরাদ্দ হয়। ঠিকাদার কাজ না করায় জরাজীর্ণ ভবনের কারণে লেখাপড়ার চরম ব্যাঘাত ঘটছে। বৃষ্টির দিনে টিনের চাল থেকে পানি পড়ে। ঝড়-বাতাসে থাকতে হয় আরও আতঙ্কে।

পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ওই বিদ্যালয়ের টেন্ডার হয়েছে। তবে টেন্ডারের ওই কাজের দেখভাল করেন অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হাসান। তাই এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।

উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হাসান জানান, পিরোজপুরের আমিরন এন্টারপ্রাইজের মো. রফিক গাজী ওই ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছেন। গত ১০-০৩-২০২১ সালে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩২ হাজার ২২১ টাকা বরাদ্দে ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় আমিরন এন্টারপ্রাইজ। কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। ভবন নির্মাণের আগে একটি টেস্ট পিলার গেঁথে কাজ ফেলে রেখেছে প্রায় তিন বছর। কাজ করানোর জন্য ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। গাফিলতি করে তারা কাজ ফেলে রেখেছে। এখন কাজের মেয়াদ শেষ।

আমিরন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কাজের ঠিকাদার মো. রফিক গাজী বলেন, ‘কাজের টেন্ডারের পরপরই নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। তা ছাড়া আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় কাজ করতে পারিনি।’

সর্বশেষ