৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে রমরমা জুয়ার আসর !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
বরিশাল বাণী:  সন্ধা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে বরিশালের  বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকে কেদারপুর ইউনিয়ন হারিয়ে গেলেও হারাচ্ছে না এখানকার অালোচিত জুয়া অাসর, মাদক ও চুরির মত সংগঠিত হওয়া অনেক অপরাধ। অদৃশ্য কারনেই রমরমা জুয়ার অাসর বন্ধ হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় জুয়ার আসরটি পরিচালনা হয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং ও কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলাল জোরালোভাবে জুয়ার আসর বন্ধ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলা সত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।
এক সূত্রে জানা যায়, দূর দূরান্ত থেকে খেলোয়াড়রা প্রতিদিন জুয়া খেলতে আসে কেদারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভূতের দিয়া ( বোয়ালিয়া)  গ্রামে। দীর্ঘদিন জুয়ার আসর বসায় এলাকায় গরু চুরি থেকে শুরু করে ছিনতাই ও ঘর চুরির মতো অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জুয়াকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবকদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে । এজন্য বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের উদাসীনতা কে দায়ী করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো নুরে অালম বেপারী সহ অনেকে।
আর এ জুয়ার আসরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সহ আরো অনেকে।
তাছাড়া জুয়ার আসরে অতিরিক্ত অর্থের মুনফায় ( সুদে)  টাকার জোগান দিচ্ছেন স্থানীয় কয়েকজন  বাসিন্দা। তবে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় জনগণ। কারণ তাঁরা খুব প্রভাবশালী!  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, আব্দুল আলিম মেম্বার দীর্ঘ বছর যাবৎ এই পেশায় জড়িত আছেন। তাঁর সাথে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন জড়িত থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। তাদের এ জুয়ার কারণে সমাজের যুবসমাজ যেমন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে তেমনি বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মুসা আলী জানান, ইতিমধ্যে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদে জুয়ার বিষয়ে আলোচনা  হয়েছে। এটি বন্ধের জন্য জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। কেদারপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় তাঁরা বসছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এলাকার একাধিক বাসিন্দারা জানান, এসব জুয়ার অাসর বসছে প্রকাশ্যে । অার এতে মদদ দিয়ে অাসছেন অদৃশ্য এক শক্তি। এসব খেলোয়াড়েরা স্হানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
প্রশাসনের নজর এড়াতে এসব জুয়ারী খেলোয়াড়েরা স্থান পরিবর্তন করে কখনো নদীতে নৌকায়, ইট ভাটার মধ্যে, চরের মধ্যে অাবার কখনো বরের মধ্যে বসে খেলা চলিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।
সাধারণ শান্তিপ্রিয় লোকজন নীরবে এইসব সমাজবিরোধী কার্যকলাপ সহ্য করে অাসছেন। কোন প্রতিবাদ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না জুয়া খেলা।
কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নূরে আলম বেপারী সাংবাদিকদের জানান, কেদারপুর ইউনিয়ন একটি নদী বেষ্টিত ইউনিয়ন। ইউনিয়নের চারদিকে নদী থাকায় প্রতিবছর বর্ষায় তীব্র ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে কেদারপুর ইউনিয়নের মানচিত্র। নদী ভাঙ্গন রোধে পরিকল্পিত নদীশাষন ও নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বাবুগঞ্জ – মুলাদী আসেন সাংসদ মোঃ গোলাম কিবরিয়া টিপু ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। আর কেদারপুর ইউনিয়নের জুয়া বন্ধে বহুবার চেষ্টা করেছি। জানিনা কোন অদৃশ্য কারনে থামছে না। এছাড়াও তিনি বলেন, আমি চাই কেদারপুর মাদক ও জুয়া মুক্ত হোক। প্রশাসন ইচ্ছে করলে সব কিছুই সম্ভব।
বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মাহাবুবুর রহমান জুয়া খেলার ব্যাপারে মুঠোফোনে বলেন, আমি থানায় যোগদানের পর ৫ টি মামলায় বেশ কয়েকজন কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেছি। আমার জানামতে বাবুগঞ্জ থানা এলাকায় এখন আর কোনো জুয়া খেলা চলে না। ওরা সীমান্তবর্তী বিমানবন্দর থানা এলাকায় বসে। জায়গা ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় ওদের ধরা যায়না। পুলিশের উপস্থিতি টের পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ