৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোলায় শয্যা সঙ্কটে এক বেডে নিউমোনিয়া আক্রান্ত একাধিক শিশু

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

<> প্রতিদিনই ৫০-৬০ জন করে শিশু ভর্তি হচ্ছে ভোলা সদর হাসপাতালে
<> শয্যা সঙ্কটে এক বেডে দু-তিন শিশুর চিকিৎসা
<> বর্ষা মৌসুমে হঠাৎ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক :: চলতি বর্ষা মৌসুমে ভোলায় হঠাৎ করে বেড়েছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই ভোলা সদর হাসপাতালে ৫০-৬০ জন করে শিশু ভর্তি হচ্ছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রতিদিন অধিক রোগী ভর্তি হওয়ায় এক বেডে দু-তিন শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দৌলতখান পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা শিশুর অভিভাবক খাদিজা বেগম জানান, তার ছয় মাস বয়সী শিশুটি কয়েক দিন ধরে ঠান্ডা সমস্যায় ভুগছিল। পরে শ্বাসকষ্ট হলে শনিবার (৩ জুলাই) সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের নার্সরা স্যালাইন ও ইনজেকশন পুশ করেন। এখন শিশুটি আগের চেয়ে একটু ভালো অনুভব করছে।

বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা শিশুর অভিভাবক মিঞ্জু বেগম বলেন, ‘আমার আড়াই মাস বয়সী ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ভর্তির পর থেকে নার্সরা চিকিৎসা দিলেও আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কোনো ডাক্তার এসে ছেলেকে দেখেননি।’

ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া থেকে এসেছেন নাজমা বেগম। তার সন্তানের বয়স তিন মাস। তার ঠান্ডা, জ্বর ও কাশির সমস্যা রয়েছে। বৃহস্পতিবার তার সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। প্রতিদিন সকালে চিকিৎসক এসে দেখে যান। নার্সরাও সবসময় চিকিৎসা দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তার শিশুর রোগ ভালো হয়নি।

নাজমা বেগম বলেন, ‘হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে বেড খালি না থাকায় এক বেডে অন্য এক শিশু রোগীর সঙ্গে আমার শিশুকে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। এক বেডে দুজন থাকায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কী করব! বাধ্য হয়ে কষ্ট করে শিশুকে চিকিৎসা দিচ্ছি।’

সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা শিশু রোগীর অভিভাবক মো. রুবেল বলেন, ‘আমার দুই বছরের শিশুর ঠান্ডার সমস্যা হলে গত দুদিন আগে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় শিশু ওয়ার্ডে বেড পাইনি। তাই এক বেডে তিন শিশুকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’

 

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ডা. আব্দুল মাজেদ শাকিল বলেন, ‘আমার এখানে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রতিদিন অধিক রোগী ভর্তি হওয়ায় বেডের সংঙ্কট রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক সংঙ্কটের পাশাপাশি নার্স-স্টাফ সংঙ্কটও রয়েছে। রোগীদের চিকিৎসা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তারপরও আমরা অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নিরুপম সরকার সোহাগ জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে জেলায় শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। সদর হাসপাতালে ১০টি শিশু বেড থাকলেও প্রতিদিন ৫০-৬০ জন শিশুরোগী ভর্তি হচ্ছে। আজ দুপুর পর্যন্ত ৫১ জন ভর্তি হয়েছে। বেড সঙ্কটের কারণে এক বেডে দুই রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে স্যালাইন ও ওষুধের কোনো সংঙ্কট নেই। ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ সংঙ্কট রয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’

ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১ থেকে ৪ জুলাই দুপুর পর্যন্ত ভোলা সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে ২২৩ জন শিশুরোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে ১ জুলাই ৫৩ জন, ২ জুলাই ৬৩, ৩ জুলাই ৫৬ ও আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত ৫১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে।

সর্বশেষ