বরিশাল বাণী ডেস্ক: বয়স্করা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন বলা হলেও দেশে করোনায় আক্রান্তের অধিকাংশই ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ ও যুবক বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে মৃত্যু হারে এগিয়ে প্রবীণরা।
আজ শুক্রবার (৫ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
করোনা সংক্রমণের পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, তরুণ ও যুবকদের করোনায় আক্রান্তের হার ২৮ শতাংশ। এরপরই আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা। তাদের আক্রান্তের হার ২৭ শতাংশ। তরুণ-যুবকরা বেশি আক্রান্ত হলেও মত্যু হারে এগিয়ে ৬০ বছরের বেশি বয়সী বৃদ্ধরা।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এ অবস্থায় তরুণদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘এই বয়সী মানুষদের অনেক বেশি সতর্কতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। এই বয়সের মানুষেরা কর্মস্থলে বেশি থাকেন। বাইরে বেশি ঘোরাঘুরি করেন, কাজের জন্যই হোক বা অন্য কারণেই হোক। যেহেতু তরুণ বয়স, তারা অনেক সময় সতর্কতা ও সচেতনতাকে ঠিকভাবে গ্রহণ করেন না। এ জন্য ২১ থেকে ৩০ এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের বিশেষভাবে অনুরোধ করব, আপনারা সতর্ক হোন, সচেতন থাকেন।’ তরুনরদর জন্য যেনো তাদের পারিবারের সদস্যরা সংক্রমিত না হন সে দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা উচিত বলে মনে করেন ডা. নসিমা।
দেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের বয়সের হার তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মৃতের হার শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সীদের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬১ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। করোনায় প্রবীণদের মৃত্যুহার বেশি থাকায় তাদের ব্যাপারে সবাইকে সর্তক হতে আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর থেকে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এর সংখ্যা। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ৩৯১ জন। মারা গেছেন ৮১১ জন। সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন।