৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ৪ জেলের একজনের মৃত্যু

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরগুনা প্রতিনিধি ::: বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া চার জেলের মধ্যে আব্দুল হাই (৩৭) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে রোববার দিবাগত রাতে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।

মৃত আব্দুল হাই বরগুনা তালতলী উপজেলার চামুপাড়া গ্রামের আচমত আলী হাওলাদারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৮ কোম্পানি কমান্ডিং অফিসার তুহিন রেজা।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, উদ্ধার হওয়া জেলেদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের মধ্যে আব্দুল হাইয়ের অবস্থা ছিল গুরুতর। তিনি বিকেল ৫টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।

উদ্ধার হওয়া জেলে ইয়াসিন জানান, ‘ডাকাত দলের তীব্র আঘাতে আমরা সাগরে পড়ে যাই। পরে দীর্ঘ ৭০ ঘণ্টা একটি বয়া ধরে ভেসে ছিলাম। এ সময় আমার হাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আমার বড় ভাই কাইয়্যুম জোমাদ্দার। এভাবে একে একে মারা যান আরো চারজন। পরে তাদের পাঁচজনকেই আমরা সাগরে ভাসিয়ে দেই। এরপর আমরা একটি জেলে ট্রলারের জালে আটকা পড়ি। তারা আমাদের ট্রলারে তুলে নেন।’

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, কালমেঘা এলাকার মাকসুদ মিয়ার এফবি মা মরিয়ম ট্রলারটি সেদিন সাগরে ছিল। তারা জাল ফেলে মাছের অপেক্ষায় ছিল। এ সময় ওই জালে আটকা পড়েন সাগরে পড়ে যাওয়া জেলেরা। তখন রাত ১১টা। তাদের দেখে মরিয়ম ট্রলারের জেলেরা তুলে নেন। পরে মাছের খাল এলাকার এফবি নিশান নামের একটি ট্রলারযোগে তাদের পাথরঘাটার উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তারা পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, ফিরে আসা চার জেলের সামনেই ভাসমান অবস্থায় অন্যদের মৃত্যু হয়েছে। তাদের বাড়ি বরগুনা জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, জেলেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের শরীর এখন খুবই দুর্বল। আমরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। তবে দু’জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, জেলেদের উদ্ধারের ব্যাপারটি ডিসি স্যারকে জানানো হয়েছে। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারটি উপজেলা প্রশাসন দেখছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও গরম কম্বল দেয়া হবে।

কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন অফিসার এম মেহেদী হাসান জানান, বঙ্গোপসাগরে দস্যুদের হামলায় নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। তাদের চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পায়রা বন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় একটি ট্রলারে দস্যুরা হামলা করে। এ সময় নয় জেলেকে আটকে রেখে তারা ট্রলারের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়।

সর্বশেষ