৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
তীব্র তাপদাহে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত বিতরণ করলো আলীমাবাদ সমাজ কল্যাণ সংস্থা আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন ভোলায় পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণা : প্রতারক আটক উপজেলা নির্বাচন : গৌরনদীতে তিন প্রার্থীর ব্যতিক্রর্মী প্রচারণা

আ’লীগের দুজনকে প্রার্থী ঘোষণা আগৈলঝাড়ায় সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ ॥ গৌরনদীতে হারিছুর রহমান

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ জন নেতা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ছয় মাস ধরে তাঁরা গণসংযোগ করেছেন।

তার ফলে নির্বাচনী আমেজ যেমন বাড়ছিল সাথে সাথে দলের মধ্যে বিভেদ আর অবিশ্বাসও বেড়ে চলছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছে ছিলো যে, কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ এবং ভোটে বিজয়ী হওয়ার জন্য সমাজবিরোধীসহ প্রাক্তন সর্বহারাদের দলে ভেড়ানোর তলে তলে প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছিল। যা শুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশকে কলুষিত করতে পারে এবং আওয়ামী লীগের দলীয় চরম বিশৃংখলা বা বিভেদ তৈরী করতে পারতো।

এই পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল রোববার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে দুই উপজেলায় দুজনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এতে প্রচারণায় থাকা অন্য নেতারা হঠাৎ নিশ্চুপ বনে গেছেন। হাফ ছেড়ে বেচেছেন দলের নিরীহ নেতা কর্মিরা। আর সাধারন নাগরিকরাও স্বস্থিবোধ করছেন বলে এই প্রতিবেদকে অনেকেই জানিয়েছেন।

বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বাসভবনে গতকাল রাতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৌরনদীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান ও আগৈলঝাড়ার সংসদ সদস্যের ছেলে সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

বিষয়টি জানাজানির পর নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই নেতার ছবি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।তারা দলের ঐক্য ধরে রাখতে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েও মত প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত সম্ভাব্য এক প্রার্থী বলেন, সংসদ সদস্যের বাসভবনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে রাতে দুজনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। যেহেতু আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ দুজনকে মনোনীত করেছেন। এ জন্য তিনি প্রার্থী হবেন না।

দলীয় সূত্র ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় নির্বাচন হবে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জয়নাল আবেদীন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামী লীগের জেলার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা মনিরুন নাহার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মুন্সী, পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান, মেয়রের ভাই আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আনিসুর রহমান।

তাঁরা ছয় থেকে সাত মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, মতবিনিময়সহ গণসংযোগ করেছেন। কিন্তু গতকালের পর হঠাৎ তাঁদের প্রচারণা স্থবির হয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে প্রার্থী হতে পৌর মেয়রের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হারিছুর রহমান।

এইচ এম জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না।’ প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তাই আমি প্রার্থী হব না।’

মনির হোসেন মিয়া বলেন, নেতা-কর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হচ্ছে, তবে এটা সঠিক নয়। নিজের প্রার্থিতার বিষয়ে বলেন, পরিস্থিতির ওপর সিদ্ধান্ত নেবেন।

ফরহাদ হোসেন মুন্সী বলেন, বরিশালের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে।

দলীয় সূত্র জানায়, আগৈলঝাড়ায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রইস সেরনিয়াবাত, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন প্রচারণা চালান।

কয়েক দিন ধরে প্রার্থী হিসেবে নেতা কর্মিদের মুখে মুখে আলোচনায় আসেন সংসদ সদস্য হাসানাত আবদুল্লাহর কনিষ্ঠ ছেলে সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ। এরপর ওই দুই নেতা প্রচারণা বন্ধ করে দেন। এর মধ্যে গতকাল রাতে আশিক আবদুল্লাহকে প্রার্থী মনোনীত করা হয়।

নাম প্রকাশ না করে আগৈলঝাড়া উপজেলার এক নেতা বলেন,”যে যা ই বলুক না কেন আশিক আব্দুল্লাহ প্রার্থী হওয়ায় নেতা কর্মিরা খুশি আর দল চরম বিভেদের হাত থেকে রক্ষা পেলো।”

জানতে চাইলে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রইস সেরনিয়াবাত বলেন, ‘এমন সিদ্ধান্তের কথা আমার জানা নেই।’ নিজের প্রার্থিতার বিষয়ে বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে দলীয়ভাবে অনেক আগেই আমরা নেতা-কর্মীরা তাঁকে (আশিক) প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আশিক আবদুল্লাহ আগৈলঝাড়ার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এটা নিশ্চিত।’

সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন বলেন, উপজেলা নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে না। আশিক আবদুল্লাহ প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁরা তাঁর বিজয়ের লক্ষ্যে কাজ করবেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে হারিছুর রহমান ও আশিক আবদুল্লাহর মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।

জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চুন্নু বলেন, “উপজেলা নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার এবার সুযোগ নেই। তবে আমাদের সকলের রাজনৈতিক অভিভাবক এবং জেলা সভাপতি নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে এবং দলীয় ভালমন্দ বিচার করেই গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।আর এই সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মিদের ইচ্ছার প্রতিফলন।যা দলকে দুই উপজেলায় আরো গতিশীল করবে।

সর্বশেষ