জাহিদ হাসান,মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে সরকারী কর্মকর্তা কতৃক এক কলেজছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। আজ (৫ ডিসেম্বর) রোববার সকালে সাড়ে এগারোটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে প্রথমে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বিচারের দাবীতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, শনিবার দুপুরে শহরের সরকারি গণগ্রন্থাগারে বই পড়তে যায় সরকারী সুফিয়া মহিলা কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। এ সময় বই চুরির অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিয়ান মো: বেলায়েত হোসেন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এসময় এ ঘটনার বিচার ও লাইব্রেরিয়ান বেলায়েত হোসেনের অপসারণের দাবী করেন বক্তারা। পরে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের কাছে বিচারের দাবীতে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে কলেজ ছাত্রী মাদারীপুরের সরকারী গণগ্রন্থাগারে তিন বান্ধবী মিলে বই পড়তে যায়। এসময় ঐ ছাত্রীর ব্যক্তিগত প্রাইভেট শিক্ষক ডাক দেন। এসময় ঐ ছাত্রী এগিয়ে আসলে মাদারীপুরের সরকারী গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরীয়ান বেলায়েত হোসেন তাকে ডেকে নিয়ে বই চুরির অভিযোগ দেন। এক পর্যায়ে অকাট্যভাষায় গালি দেন এবং তাকে চড় থাপ্পড় মারেন। এই অপমান সইতে না পেরে ঐ ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে ছাত্রীর পরিবার টের পেয়ে আত্মহত্যার হাত থেকে বাচান।
কলেজ ছাত্রীর মা বলেন, আমার মেয়ের শরীরে হাত তুলেন লাইব্রেরীয়ান বেলায়েত হোসেন। সে এই কাজ করে বড় অন্যায় করেছেন। আমার মেয়ে সেই অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন। আমি এই জঘন্য ঘটনার বিচার চাই।
ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রী বলেন, আমি বই চুরি করিনি। যদি আমি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে আমাকে আইনের হাতে তুলে দিতেন। কিন্তু আমাকে চড়থাপ্পড় মেরেছেন। তা কিছুতেই মানতে পারছিনা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত লাইব্রেরীয়ান বেলায়েত হোসেনের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। এজন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এ ব্যাপারে মাদারীপুুর মহিলা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, ঘটনাটি খুবই জঘন্যতম। কোনভাবেই একজন লাইব্রেরীয়ান একজন কলেজছাত্রীর শরীরে হাত তুলতে পারেনা। অবশ্যই অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করা হবে। আর ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই অপরাধীকে আইনের মাধ্যমে বিচার করা হবে।