৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন ভোলায় পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণা : প্রতারক আটক উপজেলা নির্বাচন : গৌরনদীতে তিন প্রার্থীর ব্যতিক্রর্মী প্রচারণা ববিতে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায়

চরফ্যাশনে করোনা ঝুঁকিতে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিং প্রকল্পের বিস্কুট বিতরণে অনিয়ম

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

এম লোকমান হোসেন: ভোলার চরফ্যাশনে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের বিস্কুট বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশা বাংলাদেশের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে করোনা ঝুঁকিতে পড়েছে উপজেলার ৬০ হাজার শিশু শিক্ষার্থী। একই কারণে উদ্বেগে আছেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের সহশতাধীক শিক্ষক পরিবার। শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে সম্পাদিত চুক্তি গোপন রেখে বিতরণকৃত পুষ্টি সমৃদ্ধ এই বিস্কুট গোটা উপজেলার ঘরে ঘরে করোনা সংক্রোমনের কারণ হতে পারে বলে আশংকা করছে সাধারন মানুষ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রোমন মোকাবেলা এবং ব্যাপক বিস্তার প্রতিরোধকল্পে ১৮ মার্চ ২০২০ সন থেকে বিদ্যালয়গুলোতে স্কুলফিডিং প্রকল্পের বিস্কুট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়। ২০ জুন ২০২০ সনে দরিদ্র পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের ৩০তম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সমন্বয়করে এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশের কর্মীদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। এই প্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদপ্তর স্কুল ফিডিং প্রকল্পভূক্ত উপজেলার ৫৯ হাজার ৯শ’ ১২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনাকালীন সময়ে প্রতিমাসে ১শ’ ২৬ মেট্রিক টন বিস্কুট বিতরণের বরাদ্দ দেয়া হয়।
২০২০ সনের পুর্বেকার চুক্তি অনুসারে বিতরণ ব্যয় টন প্রতি ২১শ’ ৫০টাকা ছিল। ওই বরাদ্দের থেকেই শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট বিতরণ করা হবে বলে প্রত্যাশা বাংলাদেশ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে চুক্তিবন্ধ হয় । চুক্তি অনুযায়ী কারোনা পরিস্থিতিতে সংক্রোমন রোধে বিদ্যালয়সমূহে প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর বিস্কুট বিতরণ করা হয়। কিন্তু এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে সম্পাদিক চুক্তির তথ্য গোপন করে প্রকল্প এলাকায় করোনা কালের আগের মতোই শিশু শিক্ষার্থীদের ডেকে স্কুলে এনে শিক্ষকদের মাধ্যমে বিস্কুট বিতরণ করছে। ফলে বিস্কুট বিতরণের নির্ধারিত দিনে শত শত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়গুলোতে হুমড়ি খেয়ে পরছে । যেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। এতে করে ঘরে ঘরে জনে জনে সংক্রোমন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা বাড়ছে। পাশাপাশি ঘরে ঘরে বিস্কুট পৌছে দেয়ার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ গোপনে বিতরণকারী এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশ আত্মসাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চরফ্যাশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নিজাম উদ্দিনসহ একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, করোনা কালে প্রধান শিক্ষকরা নিজ খরচে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিস্কুট বিতরণ করেছেন। করোনা কালে সরকারী গাইড লাইন মেনে যথাযথ ভাবে বিস্কুট বিতরণ করা হয়েছে। শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট বিতরণ করা কথা তাদের করোই জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমীন সাংবাদিককে জানান, করোনা কালে শিক্ষার্থীদের ডেকে স্কুলে জড়ো করে বিস্কুট বিতরণ করা সঠিক ছিল না। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বিতরণকারী এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই বিস্কুট বিতরণ করার কথা ছিল। বিষয়টি উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার তৃষিত কুমার চৌধুরী জানান, এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশ করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়মাবলীর গোপন করেছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনিয়মের বিষয়টি অবহিত করবো।
ভোলা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র হালদার জানান,করোনা প্রাদূভার্বের কারণে এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশ নিজ কর্মীদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়িতে বিস্কুট পৌছে দেয়ার সিন্ধান্ত হয়েছে। তবে বিতরণে প্রত্যাশা বাংলাদেশের অনিয়ম বিষয় আমার জানা ছিলোনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্কুল ফিডিং প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক ও সহকারী সচিব আবু সাইয়েদ জানান, করোনাকালীন সময়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার জন্য বিতরণকারী এনজিও প্রত্যাশার সাথে শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি চুক্তি হয়েছে। পুর্বের বরাদ্দের টন প্রতি ২১শ’৫০ টাকার মধ্য থেকেই এনজিও শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট বিতরণ করবেন সম্পাদিক চুক্তিতে এমন শর্তই ছিল। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে এজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিতরণকারী এনজিও প্রত্যাশা বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক শাহবিয়ার কবির শোভন জানান, জনবল সংকটের কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে শিক্ষকরা স্কুল থেকে বিস্কুট বিতরণ করেছেন।

সর্বশেষ