৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
তীব্র তাপদাহে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত বিতরণ করলো আলীমাবাদ সমাজ কল্যাণ সংস্থা আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন ভোলায় পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণা : প্রতারক আটক উপজেলা নির্বাচন : গৌরনদীতে তিন প্রার্থীর ব্যতিক্রর্মী প্রচারণা

চাল পায়নি জেলেরা, চুরি করে ধরছে ইলিশ হচ্ছে জেল-জরিমানা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

ডিমওয়াল ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য নদ-নদী-সাগরে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিয়ম কার্যকরে আছে জেলা-জরিমানার বিধানও। এই সময়ে জেলেরা যাতে ইলিশ শিকার না করে সে জন্য তাদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সহায়তার চাল পায়নি জেলেরা। ক্ষুধার তাড়নায় চুরি করে নদীতে নামছে আর ধরা পরলে জেল জরিমানার শিকার হচ্ছে তারা।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্ধ্যা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর মোহনায় মীরগঞ্জ জেলে পল্লীতে হাহাকার চলছে। পরিবারের কর্তারা বেকার। আয় নেই; তাই অর্ধহার-অনাহারে কোনমতে বেঁচে আছেন জেলে পল্লীর বাসিন্দারা।

জেলেরা জানান, নদীতে মাছ শিকার করেই চলে তাদের জীবন জীবিকা। সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন। আয় নেই; পরিবারে খাবারও নেই। কস্টে চলে তাদের জীবন। সরকার সাহায্য দিলেও তা পায়নি তারা। প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে বিত্তবানদেরও জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত কার্ড দেয়া হয়েছে দাবি তাদের।

জেলে কামাল সিকদার বলেন, পেটের ক্ষুধায় নদীতে নামি। প্রশাসন ধাওয়া দেয়। কাউকে ধরে নিয়ে যায়। কেউ কেউ অভিযানের কবল থেকে বেঁচে যায়।

আরেক জেলে মো. সোহাগ জানান, সারা বছর নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চলে তাদের। অথচ সরকারি সাহায্যের তালিকায় তার নাম নেই। পেটের দায়ে নদীতে নামতে হয়। কিছু করার নেই।

জেলে হারুন মাল বলেন, জেলে তালিকায় তার নাম আছে। কিন্তু সরকারি সাহায্য ঠিকমতো পাচ্ছেন না তিনি। যাদের পাকা বাড়ি আছে, জেলে নয় তাদের চাল দেয়া হচ্ছে। আবার যে জেলেরা সাহায্য পাচ্ছে তাদের ২৫ কেজির জায়গায় ২০ কেজি করে দেয়া হচ্ছে।

মোশারেফ হোসেন নামে এক জেলে বলেন, নদীতে মাছ শিকার করতে না পারায় করুন অবস্থায় সংসার চলছে। দোকানে গেলে বাকিতে সদায় দেয় না। জেলে কার্ড থাকলেও শুক্রবার পর্যন্ত সরকারি সাহায্য পাননি।

ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির স্থানীয় সভাপতি রহমালী সিকদার জানান, নিষেধাজ্ঞার ১৫ তম দিন শুক্রবার পর্যন্ত কার্ডধারী ৩০ ভাগ জেলে চাল পেয়েছে। ৭০ ভাগ জেলে এখনও সহায়তার চাল পায়নি। জেলার অন্য জেলে পল্লীতেও একই চিত্র।

নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকরে অভিযান শুরুর আগেই সকল জেলেকে পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান জেলে সমিতির সভাপতি সভাপতি রহমালী সিকদার।

চোর পুলিশ খেলার মতোই নদ-নদীতে অভিযান চালাচ্ছে মৎস্য বিভাগ সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১৩ অক্টোবর হিজলার মেঘনায় ইলিশ রক্ষা অভিযানে গিয়ে জেলেদের হামলায় আহত হয়েছে মৎস্য কর্মকর্তা ও পুলিশসহ ১৪ জন। ওইদিন ৯ জেলেকে আটক করে পুলিশ। তারপরও চলছে অভিযান। প্রতিদিনই আটক হচ্ছে জেলেরা। হচ্ছে জেলজরিমানাও।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের খাদ্য সহায়তার বেশীরভাগ বিতরন হয়েছে। বাকি জেলেরাও আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে চাল পাবেন। 

বরিশাল জেলায় সরকারী নিবন্ধনভূক্ত জেলে ৭৫ হাজার ৬৯১ জন। প্রকৃত সংখ্যা এর দ্বিগুন। এবার জেলায় ৫১ হাজার ৭০০ জেলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১ হাজার ২শ’৯২ মেট্রিক টন চাল।

গত ১৪ দিনের অভিযানে দেড় টন ইলিশ এবং বিপুল পরিমান জালসহ প্রায় সাড়ে ৪শ’ জেলে আটক হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। বিভিন্ন মেয়াদে জেল হয়েছে ৩৮৫ জনের।

সর্বশেষ