বাণী ডেস্ক।।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এআইবিএল) এর বরিশাল শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের প্রাণ নাশ এবং প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ্য থেকে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর ব্যাংকটির ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেড এর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিক বাদী হয়ে দায়েরকৃত ডায়েরী নম্বর ১৮০।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নগরীর প্যারারা রোডে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক বরিশাল শাখায় দফায় দফায় এই ঘটনা ঘটে। এ কারণে ব্যাংকটির গ্রাহক সংখ্যা কমে আসতে শুরু করে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রাহক (কোড নং ঋ৪৯) মনোয়ার হোসেন তালুকদার নগরীর কাউনিয়া প্রধান সড়কের বাসিন্দা শহীদ হোসেন তালুকদারের ছেলে।
সাধারণ ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মনোয়ার হোসেন তালুকদার, গত কয়েক বছর ধরে এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেড এর বরিশাল শাখায় শেয়ার লেনদেনের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেন। তার হিসাবে লেনদেনের কারণে ল্যাজার ব্যালেন্স নেগিটিভ হলে তা সমন্বয় করার জন্য তাকে তাগাদা দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এজন্য ক্ষুব্ধ গ্রাহক মনোয়ার হোসেন তালুকদার ক্ষুব্ধ হয়ে শাখার কর্মকর্তাদের সাথে রুঢ় আচরণ করেন। এমনকি মাঝে মধ্যে ব্যাংকের শাখা কর্মকর্তাদের নিকট অন্যায় সুবিধা দাবিও করেন।
ডায়েরী অভিযোগ করা হয়েছে, ‘গত ৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে গ্রাহক মনোয়ার হোসেন তালুকদারকে পূর্বের নেগেটিভ ব্যালেন্স সমন্বয় করতে পুনরায় তাগাদা দেলে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এজন্য তিনি অফিসের মধ্যে কর্মকর্তাদের মারধরের চেষ্টা করেন এবং পরবর্তীতে শাখা ব্যবস্থাপকসহ সকলকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া ব্যাংক কর্মকর্তাদের বরিশাল ত্যাগ না করলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান এবং অফিসিয়াল কাজে বাধা সৃষ্টি করে। পাশাপাশি ব্যাংকের অন্যান্য গ্রহাকদের এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলে। না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন মনোয়ার হোসেন তালুকদার নামের ওই বখাটে।
সবশেষ এই ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রাণে মেরে ফেলা এবং প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বরিশাল শহরে থাকতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। শুধু ঘটনার দিন ৩ ডিসেম্বর নয়, বরং ওই ঘটনার পরে প্রায় প্রতিদিনই মনোয়ার হোসেন নামের ওই ব্যক্তি ব্যাংকে এসে এমন বিশৃঙ্খলাসহ হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অি নভেম্বর করা হয়েছে। এসব বিষয় ব্যাংকের সিসি টিভিতে রেকর্ড আছে বলে ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয়। সবশেষ গত ৩০ নভেম্বর দুপুর ২টা ৫২ মিনিট এবং পরবর্তী ১ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় তিনি শাখায় প্রবেশ করে গ্রাহকদের মারধরের চেষ্টা এবং তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও লেনদেন করতে আসা গ্রাহকদের ভয়ভীতির প্রদর্শন করে। এ কারণে ব্যাংকের ওই শাখায় লেনদেন কমে আসছে। তাছাড়া ওই গ্রাহকের এমন কর্মকাণ্ডে আতংকগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনী সহায়তা পেতে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে টাকা পাবো। কিন্তু তারা দাবি করছে তারা আমাদের কাছে টাকা পাবে। এজন্য ব্যাংকে কাগজ আনতে গিয়েছিলাম। এটা নিয়ে একটু উচ্চবাচ্চ হতে পারে। কিন্তু ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া বা কর্মকর্তাদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
সাধারণ ডায়েরীর বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, ‘আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের হুমকি’র ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরী হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।