৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন ভোলায় পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণা : প্রতারক আটক উপজেলা নির্বাচন : গৌরনদীতে তিন প্রার্থীর ব্যতিক্রর্মী প্রচারণা ববিতে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায়

বিএনপির দূর্গে হানা দিতে চায় আওয়ামী লীগ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

মুহাম্মাদ আবু মুসা
ঘোষিত তফসীল অনুযায়ী আগামী ৩০জানুয়ারী/২১ শনিবার বগুড়ার গাবতলী পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনে বিএনপির দূর্গা বা খাঁটিতে এবার হানা দিতে চায় আওয়ামী লীগ। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোমিনুল হক শিলু (নৌকা মার্কা)। তাঁকে অনেকে ক্লিন ইমেজ এর মানুষ হিসেবে জানেন। তাছাড়া মানুষদের সাথে ভাল ব্যবহার, গরীব-দুঃখী মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করাসহ সার্বিক ক্ষেত্রেই তাঁর বেশ সুনাম করে থাকেন অনেকে। নির্বাচন অফিসে দেয়া তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোমিনুল হক শিলু পেশায় ব্যবসা/ঠিকাদার। শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস, তাঁর বার্ষিক আয় ২লাখ টাকা। তাঁর নগদ টাকা রয়েছে ৫০হাজার এবং স্থানীয় গাবতলী শাখায় রুপালী ব্যাংকে জমা আছে ২লাখ টাকা। এ ছাড়া স্বর্ণলঙ্কার যা রয়েছে তার মূল্য ১লাখ ৫০হাজার টাকা। তবে স্ত্রীর স্বর্ণলঙ্কার যা রয়েছে তার মূল্য ২লাখ ৫০হাজার টাকা। মেয়র প্রার্থী মোমিনুল হক শিলু’র কৃষি জমি রয়েছে ২৮শতক। যার আনুমানিক মূল্য ২৮লাখ টাকা। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী পর পর ২য় মেয়াদের বর্তমান মেয়র সাইফুল ইসলাম (ধানের শীষ মার্কা) গাবতলী উপজেলা ছাত্রদল-যুবদল এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য। তিনিও (সাইফুল) সাধারণ জনগণ ছাড়াও দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্ম্থকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। পৌর এলাকায় তাঁর সার্বিক কর্মকান্ডও একেবারে কম নয়। নির্বাচন অফিসে দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম পেশায় ব্যবসা। শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাস। তাঁর বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ২৫হাজার, দোকানসহ অন্যান্য ভাড়া ৫০হাজার ৪শত টাকা এবং পৌরসভা থেকে সম্মানী ভাতা ৩লাখ ৬০হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। নগদ টাকা রয়েছে ১লাখ ৫০হাজার, স্ত্রীর নগদ টাকা রয়েছে ২লাখ ৫০হাজার। ব্যাংকে জমা রয়েছে ১লাখ ২হাজার এবং স্ত্রীর ১লাখ ৫১হাজার টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে কৃষি জমি রয়েছে ৯০শতক এবং নিজ নামে অনাবাদী সাড়ে ৩৬শতক জমি রয়েছে। তবে স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বগুড়া শাখায় ৩৫লাখ টাকা ঋন থাকার কথা নির্বাচন অফিসে দাখিলকৃত হলফ নামায় উল্লেখ করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা জাতীয় যুব সংহতি’র সভাপতি ফজলে রাব্বী তনু। তিনি পেশায় গ্যারেজ ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাস। তাঁর বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ১লাখ ৫০হাজার ও ব্যবসা থেকে ৫০হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ২লাখ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই পীর) মনোনীত হাত পাখা প্রতিক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন গাবতলী পৌর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আহবায়ক মিজানুর রহমান মানিক। তিনি পেশায় শিক্ষকতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ফাজিল (ডিগ্রি) পাস। তাঁর বার্ষিক আয় শিক্ষকতা থেকে ২লাখ টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ২৫হাজার এবং ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৫০হাজার টাকা। জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের গাবতলী পৌর শাখার সভাপতি আইয়ুব হোসেন রাজু পাইকার জগ প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। যা বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বলা যায়। নির্বাচন অফিসে যে তথ্য দিয়েছেন তাতে উল্লেখ রয়েছে তিনি পেশায় পাট ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস। তাঁর বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ৩০হাজার ও ব্যবসা থেকে ২লাখ ৮০হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ৫১লাখ ৬হাজার টাকা। পৈত্রিক সূত্রে কৃষি জমি ২০বিঘা অনাবাদী জমি ২০শতক। এ ছাড়া ৮শতক জমির উপর বাড়ী রয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদলের গাবতলী পৌর শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল আলম রাসেল নারকেল গাছ প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তাঁকেও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বলা যেতে পারে। তাঁর দেয়া নির্বাচন অফিসে তথ্য অনুযায়ী তিনি পেশায় ব্যবসা/ দলিল লেখক, শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাস। তাঁর বার্ষিক আয় ব্যবসা থেকে ২লাখ ৫০হাজার ও দলিল লেখা থেকে ৬০হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ১০হাজার ৫শত, ব্যাংকে জমা রয়েছে ২লাখ ৩২হাজার এবং স্ত্রীর রয়েছে ৬০হাজার টাকা। কৃষি জমি রয়েছে ২০শতক এর মধ্যে অনাবাদী জমি ১৫শতক। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক গাবতলী শাখায় সিসি ঋন রয়েছে ৩লাখ টাকা। আগামী ৩০জানুয়ারী/২১ গাবতলী পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৭হাজার ৪’শ ২৩জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ৮হাজার ৫’শ ৫৬ ও নারী ৮হাজার ৮’শ ৬৭জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। একজন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার লক্ষে ৬জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ৯টি ওয়ার্ডে ৯জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৩জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার লক্ষে ৩৬জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১১জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। দিন-রাতে সকল প্রার্থীরাই ছুটে চলছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নির্বাচনী সভা, সমাবেশ, গণসংযোগ ও কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। তবে সকল প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোমিনুল হক শিলু জানান, এই এলাকা বিএনপির দূর্গা বা খাঁটি ইতিপূর্বে থাকলেও এখন আর নেই। কারন আমরা এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে ভালবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছি। যে কারনে আমাদের জোয়ার উঠেছে, ফলে বিএনপির দূর্গা বা খাঁটিতে এবার জনগন ভোটের মাধ্যমে হানা দিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করবে ইনশা আল্লাহ। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম জানান, এই এলাকা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভুমি। এখানে ৯০ভাগ মানুষই বিএনপি তথা ধানের শীষ মার্কার উপর দুর্বল। তাছাড়া বিএনপির আদর্শই মানুষের সুখ-দুখের পাশে দাড়ানো এবং কল্যাণে কাজ করা। তাই বিএনপির কর্মী ও জনগনের সেবক হিসেবে করোনাকালিনসহ সবসময় পৌর এলাকায় সকল শ্রেনী পেশার মানুষের পাশে ছিলাম এবং আছি। তিনি (সাইফুল) আরো বলেন, করোনাকালিন সময় জীবন বাজি রেখে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং স্বার্ধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছি। ফলে জনগনের ভোটের মাধ্যমে ধানের শীষ মার্কার বিজয় সুনিশ্চিত ইনশা আল্লাহ। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাজেদুল আলম রাসেল (নারকেল গাছ) বলেন, জনগন তাঁদেরকে প্রত্যাখান করে আমাকে বিজয়ী করবে ইনশা আল্লাহ। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আইয়ুব হোসেন রাজু পাইকার (জগ) তিনি বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী রয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই পীর) মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমান মানিক (হাত পাখা) বলেন, মানুষ দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে চাই। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত (লাঙ্গল) ফজলে রাব্বী তনু বলেন, দেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি থেকে সড়ে গিয়ে ৩য় শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বেছে নেবে। শেষের দিকে এসে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ আর নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু ভোটাররা সৎ যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে কারো কাছে ওয়াদাবদ্ধ হচ্ছেন না। ভোটাররা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রুহুল আমীন এর সাথে কথা বললে তাঁর অফিসে প্রার্থীদের দাখিল করা হলফ নামায় দেয়া উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গাবতলী পৌরসভা নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহনযোগ্য করতে আমরা কাজ করছি এবং সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটানিং অফিসার মোছাঃ রওনক জাহান জানান, সারা দেশের ন্যায় গাবতলী পৌরসভা নির্বাচনও অবাধ সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি আরো বলেন, কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

সর্বশেষ