৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
৪৪তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশঃ মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৮ মে বিয়ে বাড়িতে কাজীকে চর থাপ্পড় মারলেন বিএনপি নেতা ! তীব্র তাপদাহে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত বিতরণ করলো আলীমাবাদ সমাজ কল্যাণ সংস্থা আমার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে : এসএম জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচন: ভোলার তিন উপজেলায় ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ভান্ডারিয়ায় ককটেল ফাটিয়ে ও কুপিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই বরগুনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রার্থীদের পাথরঘাটায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা, ৪ জনকে শোকজ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এল মৃত ডলফিন বাউফলে গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট, স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন

রাঙ্গাবালীতে প্রাকৃতিক বনায়নের গাছ কেটে উজাড় করছে বনদস্যু চক্র!

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন গ্রামে প্রাকৃতিক বনায়নের গাছ কেটে উজাড় করছে বনদস্যু চক্র। ওই চক্রের দাবি, এসব গাছ কোন বনায়নের নয়। ব্যক্তি মালিকানা (রেকর্ডি) জমির গাছ কাটছে তারা। বিনিময় জমি মালিকদের ১-২ হাজার টাকা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চরবেষ্টিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ (পূর্বাংশ) ঘেঁষে দুই কিলোমিটারজুড়ে প্রাকৃতিক বনায়ন। বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর প্রাকৃতিকভাবে প্রায় ১৫ বছরে এই বনায়ন জন্মেছে। বনায়নে আছে ছইলা ও কেওড়াসহ কয়েক প্রজাতির হাজারও গাছ। তবে বেড়িবাঁধ রক্ষার এই বনায়নে কূনজর পড়েছে বনদস্যুদের। সচেতন মহলের দাবি, বন থাকার কারণে বেড়িবাঁধটি টেকসই আছে। এই বন বেড়িবাঁধের রক্ষাকবজ । কিন্তু বন না থাকলে বেড়িবাঁধের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও হুমকিতে পড়বে।জানা গেছে, এক মাসে আগে প্রথম দফায় এবং গত দুই সপ্তাহ ধরে দ্বিতীয় দফায় চরবেষ্টিনের ওই বনায়নের ছইলা ও কেওড়া গাছ কেটে উজাড় করছে বনদস্যু একটি চক্র। দুই দফায় প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। আর এর নেপথ্যে আছে বনখেকো জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি চরবেষ্টিনের গাছ ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বেই বনায়নের গাছ উজাড় করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, গাছ কাটার সহায়ক হিসেবে জাহাঙ্গীর একটি সিন্ডিকেট গড়েছেন। পেছন থেকে ওই সিন্ডিকেট তাকে সহায়তা করছে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বনখেকো হিসেবে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ওটা রেকর্ডি সম্পত্তির ভেতরে। বন বিভাগ দিয়া এক কিলোমিটার দূরে, অবদার (বেড়িবাঁধ) খাদা।’ কি পরিমাণ গাছ কেটেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আনুমানিক ২০-২৫ টা গাছ কাটছি। অনেক আগে উত্তর পাশ দিয়া কিছু গাছ নিছে। ৫০-৬০ পিছ হতে পারে। আমরা জমি মালিকদের কাছ থেকে গাছ কিনছি, জায়গাটা তারা পরিষ্কার করে। আমরা টাকা দিয়া কিনি। আমাদেরতো কোন অপরাধ না। তারা বেচে আমরা কিনি। মোকছেদ, সেরাজ হাওলাদারের কাছ থেকে অল্প কিনছি। ওটা আমরা খুশি হইয়া ২-১ হাজার দেই তাদের।’ কি কি প্রজাতির গাছ কাটছেন? উত্তরে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘না হুদা ছইলা গাছ, কেওড়াও না।’ গাছ কোথায় পাঠানো হয়, জানতে চাইলে বলেন, ‘আরে দাদা আমরা লাকরি করি। বরিশালের ভেতরে যেখানে যেখানে হোক। বাকেরগঞ্জ, কলসকাঠী, লেবুখালী ওদিকের ইটভাটায় পাঠাই। আর গাছ পাঠাই স্বরূপকাঠী।’ বেড়িবাঁধের আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, জমি মালিকদের অজুহাত দেখিয়ে জাহাঙ্গীর বনের গাছ কাটছে। যাদের নাম বলছেন তারা অনেকে জানেও না।সংশ্লিষ্ট সূত্রে গেছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৮৯ সাল থেকে প্রাকৃতিক বনের গাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবুও এভাবে প্রকাশ্যে প্রাকৃতিক বনায়ন উজাড় হচ্ছে কিভাবে? জানতে চাইলে বন বিভাগের চরমোন্তাজ রেঞ্জের চরবেষ্টিন ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ খান বলেন, ‘যদি রেকর্ডি সম্পত্তির ভেতরে বন হয়ে থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দরখাস্ত করবে। সেখান থেকে আমাদের মতামত চাইতে পারে যে, আমাদের কোন আপত্তি আছে কিনা। এরপর আমরা সরেজমিনে দেখে প্রতিবেদন দিব। তবে ওখানে গাছ কাটার ক্ষেত্রে কেউ আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে আসে নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের রেকর্ড কিংবা গেজেটভুক্ত জায়গা না। যদি খাস খতিয়ানে হয়ে থাকে তাহলে সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসনের জায়গা। এটা দেখভালের দায়িত্ব এ্যাসিলেন্ডের। এটা দেখভালের দায়িত্ব আমাদের না। ওখানে প্রাকৃতিকভাবে কোন গাছ জন্ম থাকলে সেটা দেখভালের দায়িত্ব প্রশাসনের।’এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। এবিষয়ে দ্রত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ