মহান বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করার আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)। তিনি আজ দূতাবাসে বিজয়ের ৫২ বছর পূর্তিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আরও বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আগামী দিনে সৌদি আরব বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বানিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের বিজনেস ফোরাম গঠিত হয়েছে, যার আওতায় ইতোমধ্যে দুদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আজ সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ও রিয়াদস্থ প্রবাসী বাংলাদেশীরা ও উপস্থিত ছিলেন। এরপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসে স্থাপিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন ও ফুল দিয়ে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরবে বসবাসরত নতুন প্রজন্মকে দেশের প্রতি ভালোবাসা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানানোর জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, দূতাবাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সবসময়ই স্কুলের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাষ্ট্রদূত মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা , ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে হবে। এছাড়া নতুন প্রজন্মকে দেশের প্রতি ভালোবাসা অনুধাবনের জন্য শেকড়ের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। এসময় তিনি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও নির্যাতিত দুই লক্ষাধিক মা-বোনদের স্মৃতির প্রতি।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর সারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন একটি সুখী সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও ২০৪১ সালে একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বের কাছে এক রোল মডেল বলে বিবেচিত।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী, প্রকৌশলী তানভীর সিকান্দার, ব্যবসায়ী এম আর মাহাবুব ও মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের বিজয় অর্জন ও দেশের সার্বিক উন্নতির ওপর আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন দূতাবাসের কার্যালয় প্রধান কাউন্সেলর মোঃ বেলাল হোসেন। আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা শেষে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যবর্গ, মুক্তিযোদ্ধা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।