করোনাভাইরাস থেকে রোগী, স্বজন, চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের সুরক্ষায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের প্রবেশ গেটে বসানো হয়েছে ডিজইনফেক্টেড চেম্বার বা টানেল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে স্থাপন করা এই টানেল এখন আর কাজে আসছে না।
রোগী এবং তাদের স্বজনরা এটির ব্যবহার ছাড়াই প্রবেশ করছেন হাসপাতালের অভ্যন্তরে। ফলে বরিশাল সিটি মেয়র যে লক্ষ্য নিয়ে হাসপাতালে ডিজইনফেক্টেড চেম্বারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তা কার্যত বিফলে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল মহানগরীতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ রূপ নিলে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের সুরক্ষায় হাসপাতালের প্রবেশ গেটে স্থাপন করা হয় ডিজইনফেক্টেড চেম্বার। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দেয়া ডিজইনফেক্টেড চেম্বারের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
রোগী এবং স্বজনদের ওই চেম্বার বা টানেলের মধ্যে দিয়ে জীবাণুমুক্ত হয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে হাসপাতালের অভ্যন্তরে। উদ্বোধনের পরে কয়েক দিন এর কার্যক্রম বেশ ভালোভাবেই চলছিল। তবে বর্তমানে এ ডিজইনফেক্টেড চেম্বার অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে দেখা গেছে, চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনরা ডিজইনফেক্টেড চেম্বার ব্যবহার করছেন না। তারা সরাসরি প্রবেশ করছেন হাসপাতালের অভ্যন্তরে। এমনকি চিকিৎসক-নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছেও নেই এর গুরুত্ব। এর ফলে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রোগীদের ডিজইনফেক্টেড চেম্বার ব্যবহার না করার কারণ খতিয়ে দেখা গেছে- ডিজইনফেক্টেড চেম্বারের ব্যবহার সম্পর্কে জানা নেই অধিকাংশ রোগী ও তাদের স্বজনদের। এটি তদারকির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করেননি কোনো ব্যবস্থাও। তাই না বুঝেই তারা ঢুকে পড়ছেন হাসপাতালের অভ্যন্তরে।
বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থানকালে কথা হয় চিকিৎসা নিতে আসা আবদুস সালাম নামের রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে। তারা জানান, ডিজইনফেক্টেড চেম্বার কী সেটা সম্পর্কে তারা অবগত নন। তাছাড়া এটা কীভাবে ব্যবহার করে সেটাও জানেন না তারা। এ কারণেই ডিজইনফেক্টেড চেম্বারের মধ্যে না গিয়ে তার বাইরে দিয়েই হাসপাতালে প্রবেশ করেছেন তারা।
অপরদিকে বেশ কয়েকজন রোগীর সচেতন স্বজন জানান, এখানে ডিজইনফেক্টেড চেম্বার বসানো হয়েছে সত্যিই কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এটি পরিচালনার জন্য কোনো অপারেটরের ব্যবস্থা করেনি। আর তাই এটি ব্যবহারের যে সুইচটি রয়েছে তা সবাই ব্যবহার করছেন না। কেননা একই সুইচ সবাই ব্যবহার করলে তা থেকেও করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল অন্তত নিজেদের সুরক্ষার জন্য হলেও ডিজইনফেক্টেড চেম্বার পরিচালনায় অপারেটরের ব্যবস্থা করা।
সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে প্রবেশ এবং বাহিরের জন্য একাধিক গেটের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে শুধু জরুরি বিভাগের গেটেই রয়েছে ডিজইনফেক্টেড চেম্বার। যে কারণে হাসপাতালকে করোনা থেকে নিরাপদ রাখা কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়।
ডিজইনফেক্টেড চেম্বারের তত্ত্বাবধানে থাকা আউটডোর ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না। জরুরি বিভাগে যারা কর্মরত তারা বলতে পারবেন।”